কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আগামী (২০২০) শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যথারীতি এবারও লটারির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণীতে সমাপনী পরীক্ষার ফল এবং অন্যান্য শ্রেণীতে পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরের সকল সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এবারও ঢাকা মহানগরীর স্কুল পার্শ্ববর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ এলাকা কোটা সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়ে নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আগেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর সকল প্রতিষ্ঠান থেকে কোন শ্রেণীতে কতটি আসন শূন্য রয়েছে তার তালিকা সংগ্রহ করবে। ভর্তির পর কোন প্রতিষ্ঠান তাদের আগে পাঠানো আসন সংখ্যার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করছে কিনা তা যাচাই করবে। যদি কোন প্রতিষ্ঠান ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আগে পাঠানো শূন্য আসন সংখ্যার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করে তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলিজনিত কারণে তাদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান মহানগরী বা জেলা ও উপজেলা ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা নেবে।
সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থল পরিবর্তনের জন্য সন্তানের স্কুল পরিবর্তনের সুযোগ আগে ছিল জেলা থেকে জেলায় বদলির কারণে। যেমন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বদলি হলে সন্তানেরও ওই জেলায় বদলির সুযোগ ছিল। কিন্তু এক জেলার মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন উপজেলায় বাবা কিংবা মা বদলি হলে সন্তানের স্কুল পরিবর্তনের সুযোগ ছিল না। তবে এবারের নীতিমালায় একই জেলার মধ্যে উপজেলায় বদলি জনিত কারণেও সন্তানের স্কুল পরিবর্তনের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে শূন্য আসনের অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না। অতিরিক্ত ভর্তি করাতে হলে মন্ত্রণালয় থেকে আগে থেকেই অনুমতি নিতে হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক আবদুল মান্নান সরকার বলছিলেন, নীতিমালা জারি করা হয়েছে। প্রায় সকল বিষয়ই আগেরমতো আছে। তবে সরকারী কর্মচারীদের বদলি জনিত কারণে সন্তানের স্কুল পরিবর্তনের সুযোগ এবার কিছুটা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে জেলার মধ্যে কোন উপজেলায় বদলি হলে সন্তানের বদলির সুযোগ পেতেন না সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এবার সেই সুযোগও রাখা হয়েছে।
নীতিমালায় সব মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরের সব সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপজেলা সদরেও কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। তবে নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোন কারণে অনলাইনে না করা গেলে কেবল উপজেলার ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি ভর্তি করা যাবে।
এবারও প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর তালিকা প্রস্তুত করার পাশাপাশি শূন্য আসনের সমানসংখ্যক অপেক্ষমান তালিকাও প্রস্তুত রাখতে হবে। যমজ সন্তানের একজন আগে থেকে অধ্যায়নরত থাকলে ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।
ঢাকা মহানগরীতে সরকারী বিদ্যালয় এলাকায় ওই এলাকার ৪০ শতাংশ কোটা রেখে অবশিষ্ট ৬০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ১০ শতাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণী উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা সন্তানদের ছেলে-মেয়ের জন্য ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের জন্য দুই শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তান এবং সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আরও দুই শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়েছে।
ভর্তির আবেদন ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা। সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত থেকে বেশি হবে না।