কাজিরবাজার ডেস্ক :
কোন রকমের জটিলতা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সারাদেশে শুরু হয়েছে পঞ্চম শ্রেণীর প্রাথমিক ও এবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা। পরীক্ষায় বসেছে ২৯ লাখ লাখেরও বেশি শিশু শিক্ষার্থী। প্রথম দিন ছিলনা কোন প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ। তবে প্রশ্নফাঁসের গুজব রোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। গুজব সৃষ্টিকারী কয়েকটি লিঙ্ক শনাক্ত করা হয়েছে জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পরীক্ষার প্রথম দিন রবিবার রাজধানীর ভিকারুননিসা নুন স্কুল এ্যান্ড কলেজে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। জাকির হোসেন বলেন, সারাদেশে সুষ্ঠুৃভাবে পরীক্ষা সম্পাদন করতে মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের সঙ্গে জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রশ্নফাঁসে গুজব রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি করছে। পরীক্ষার আগে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের গুজব ছড়ানোর বিষয়টিও নজরদারি করা হচ্ছে। কয়েকটি লিঙ্ক শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, গুজবের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্কতা ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে সারাদেশে কোথাও প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পঞ্চম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের ফাইল মন্ত্রণালয়ে চালাচালি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী চাইলে এ পরীক্ষা তুলে দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত করা হবে। সে লক্ষ্যে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে আক্রান্ত জেলাগুলোর সকল কেন্দ্রে এ পরীক্ষা আয়োজন করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, বুলবুলে আক্রান্ত বিভিন্ন জেলায় নানা ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলেও সেসব স্থানে কোন পরীক্ষা কেন্দ্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ কারণে সেসব জেলায় নির্ধারিত সকল বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।
সচিব আকরাম আল হোসেন আরও বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কমাতে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা তুলে দিয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে। এর মাধ্যমে ছোট ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা কমে যাবে। তবে এ কার্যক্রম ২০২০ সাল থেকে চালু করার চিন্তাভাবনা থাকলেও এ বছর থেকে ১০০টি বিদ্যালয়ে তা পাইলটিং করা হবে। এতে সফলতা আসলে ২০২১ সাল থেকে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তা চালু করা হবে।
এ বছর খাতা মূল্যায়ন বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এফ এম মনজুর কাদির বলেন, পঞ্চম শ্রেণীর খাতা মূল্যায়ন নিয়ে প্রতিবছর নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে এ বছর এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলায় মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রতি বছর ৩০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এজন্য একটি আলাদা বোর্ড তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। সমাপনী-এবতেদায়ি পরীক্ষা আয়োজনে একটি বোর্ড তৈরি করাটা অতি গুরুত্বপূর্ণ।