আজ জাতীয় সম্মেলন ॥ স্বেচ্ছাসেবক লীগেও আসছে এক ঝাঁক নতুন মুখ

52

কাজিরবাজার ডেস্ক :
কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগের পর আজ শনিবার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলন। দীর্ঘ সাত বছর পর আজ বেলা এগারোটায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পূর্বের দুই সংগঠনের মতো স্বেচ্ছাসেবক লীগেও এক ঝাঁক নতুন মুখ আসছে বলে জানা গেছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ও ১৩ উপ-কমিটির নেতারা ইতোমধ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন। নৌকা আকৃতির বিশাল সম্মেলন মঞ্চে ও প্যান্ডেল নির্মাণের পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বর্ণিল সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটিসহ ৭৯ সাংগঠনিক জেলার ১ হাজার ৯৭৫ কাউন্সিলর ও প্রায় ১৮ হাজার ডেলিগেট এবং ১৫ হাজার অতিথিসহ প্রায় ৩৫ হাজার নেতাকর্মী সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
এবারই প্রথম সংগঠনটির দুই শীর্ষ নেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াই স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলন হচ্ছে। সংগঠনটির সম্মেলন ঘিরে তাই সর্বত্র নতুনের আবাহন। ক্যাসিনো ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চলার মধ্যেই নানা অভিযোগে গত ২৩ অক্টোবর সভাপতির পদ থেকে এ্যাডভোকেট মোল্লা মোঃ আবু কাওছারকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এর একদিন পরই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপিকে সম্মেলন কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এই দুই নেতাকে সম্মেলনে আমন্ত্রণও জানানো হয়নি।
এ অবস্থায় সংগঠনের জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গুহের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর পরিচালনায় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন আয়োজিত হবে। এতে বক্তৃতা পর্ব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও শোক প্রস্তাব ও সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপন করা হবে। উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে দুপুর আড়াইটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব কাউন্সিল অধিবেশনে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে সদ্যসমাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতৃত্বও ঘোষণা করা হবে। গত ১১ ও ১২ নবেম্বর এই দুটি শাখার সম্মেলন হলেও জাতীয় সম্মেলনের সঙ্গে নতুন নেতাদের নাম ঘোষণার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল।
১৯৯৪ সালের ২৭ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা স্বেচ্ছাসেবক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১২ সালের ১১ জুলাই অনুষ্ঠিত সংগঠনের সর্বশেষ অর্থাৎ দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনে এডভোকেট মোল্লা মোঃ আবু কাওছার সভাপতি এবং পংকজ দেবনাথ এমপি সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্র্নিবাচিত হন। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পর জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও এবার প্রায় সাড়ে সাত বছর পর এই সম্মেলন হতে যাচ্ছে।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠেয় জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ ও আগ্রহ দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে আসতে আগ্রহী নেতারাও শেষ মুহূর্তের লবিং তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন।
সংগঠনের সভাপতি পদপ্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছে বর্তমান জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মতি, মঈন উদ্দিন মঈন, সৈয়দ নুরুল ইসলাম নুরু, সাবেক এমপি তানভীর শাকিল জয়, এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু, কাজী শহীদুল্লাহ লিটন, এ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল, নির্মল কুমার চ্যাটার্জী প্রমুখের নাম।
সাধারণ সম্পাদক পদের লড়াইয়ে জোরালোভাবে রয়েছেন বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সংগঠনটির বর্তমান নেতা খায়রুল হাসান জুয়েল, সুব্রত পুরকায়স্থ, গিয়াস উদ্দিন পলাশ, শেখ সোহেল রানা টিপু, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, আবদুল আলীম বেপারি, সালেহ মোহাম্মদ টুটুল, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, রফিকুল ইসলাম লিটন, ওবায়দুল হক খান, আবুল ফজল রাজু, এম এ হান্নান প্রমুখ।
এদিকে সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার কমিটি এখনও ঘোষণা না হওয়ায় এ দুটি শাখার নেতৃত্বে আসতে প্রায় তিন ডজন নেতা ব্যাপক লবিং চালাচ্ছেন। এতে বর্তমান কমিটির নেতারা ছাড়াও ছাত্রলীগের সাবেক নেতারাও রয়েছেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।