সাকিবের মাসিক আয় ২৩ কোটি টাকা!

36

কাজিরবাজার ডেস্ক :
‘ক্রিকেটের খবরা খবর অনুসরণ করে’ নামের একটি ওয়েবসাইট একবার হিসাব দিয়েছিল যে সাকিব আল হাসানের মাসিক আয় প্রায় ২৩ কোটি টাকা।
জাতীয় দল ছাড়াও বিপিএল, আইপিএল, সিপিএল, বিগ ব্যাশসহ বিশ্বের প্রায় নামিদামি টুর্নামেন্টেই নিয়মিত বর্তমান বিশ্বের সেরা এই অলরাউন্ডার।
এর বাইরেও বেশকিছু নামকরা কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর যেমন হয়েছেন তেমনি জনকল্যাণমূলক কাজের অংশ হিসেবে শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও কাজ করছিলেন ইউনিসেফ কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।
বিভিন্ন সময়ে মডেল হয়েছেন বা পণ্যের বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছেন এমন কোম্পানির সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।
কোমল পানীয়, বিস্কুট, ব্যাংক, ইলেকট্রনিকস, মোটরসাইকেল, আইসক্রিম, সাবান, অ্যান্টি ভাইরাস সফটওয়্যারসহ বহু পণ্যের বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছেন।
এ ধরনের কতগুলো কোম্পানির সঙ্গে এ মুহূর্তে তার চুক্তি আছে সেটি জানা না গেলেও সম্প্রতি গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে বিসিবি সভাপতির ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি।
কিন্তু আইসিসি থেকে নিষেধাজ্ঞার পর পণ্যদূত বা শুভেচ্ছাদূত হিসেবে সাকিব যেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত বা চুক্তিবদ্ধ ছিলেন সেসব চুক্তির এখন কী হবে?
পরিবর্তন আসবে না ইউনিসেফ ও দুদকের সিদ্ধান্তে : জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর বা শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করলেও এ নিয়ে সাকিব আল হাসান ও প্রতিষ্ঠানটির মধ্যে কোনো আর্থিক সংশ্লেষ ছিল না। এমনকি এ কাজের জন্য সাকিবকে বিসিবি বা আইসিসির অনুমোদনও নিতে হয়নি।
আর সে কারণেই আইসিসির সিদ্ধান্তের জন্য তাকে সেখান থেকে বাদ দেওয়া বা বিষয়টি পুনর্মূল্যায়নের কোনো প্রয়োজন আছে বলেও তারা মনে করেন না।
এমনকি সংস্থাটির কর্মকর্তারা এটি নিয়ে কোনো মন্তব্যই করতে রাজি হননি বিষয়টি ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো বিষয় নয় বলে।
তারা বলেন, এখানে সাকিব ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছেন এবং এটি তার জন্য আর্থিক লাভজনক বিষয়ও নয়।
অন্যদিকে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন সাকিবকে নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি দুঃখজনক। কিন্তু একই সঙ্গে সাকিব যে ভুল স্বীকার করেছেন তার মাধ্যমে তিনি উচ্চ নৈতিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন যখন চেয়েছে তখন সাকিব বিনা পয়সায় আমাদের সঙ্গে কাজ করেছে। সে তরুণদের আইডল। দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে আমরা সামনেও সাকিবকে চাইব এবং আমাদের আশা যে সাকিব আগের মতোই আমাদের পাশে থাকবেন।’
গ্রামীণফোনের আলোচিত চুক্তির ভবিষ্যৎ কী?
খেলোয়াড়দের নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু এরপর গ্রামীণফোনের সঙ্গে প্রায় তিন কোটি টাকার একটি চুক্তি করেছিলেন তিনি, যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
কারণ বিসিবি আরেকটি টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এবং খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিসিবির চুক্তিতে কোনো টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে জড়িত না হওয়ার শর্ত ছিল।
এসব কারণে গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ব্যাপক ক্ষুব্ধ ছিল বিসিবি।
কিন্তু এখন আইসিসির নিষেধাজ্ঞার পর অন্তত এক বছর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতে পারবেন না বাংলাদেশে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট দলের অধিনায়ক।
এটি কি তার ও গ্রামীণফোনের মধ্যকার চুক্তিতে কোনো প্রভাব ফেলবে?
জানা গেছে, বোর্ডের সঙ্গে সমস্যা হতে পারে মনে করে গ্রামীণফোন বিষয়টি সাকিবের সঙ্গে আগেই আলোচনা করেছিল। সাকিব তখন বোর্ডের অনুমোদন নিজে নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে তাদের জানিয়েছিলেন।
কিন্তু এখন যখন আইসিসির নিষেধাজ্ঞা এলো তখন গ্রামীণফোন কি এই চুক্তি বহাল রাখবে?
এমন প্রশ্নের আনুষ্ঠানিক কোনো জবাব দিতে রাজি হয়নি গ্রামীণফোন। মন্তব্য পাওয়া যায়নি অন্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও।
কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলেন, আইসিসির নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে তাদের করা চুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই।
সরাসরি সাকিব আল হাসান বা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির- দু’পক্ষের কেউ মনে করলে চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু তেমন কোনো পরিস্থিতি দু’পক্ষের মধ্যে আসেনি বলেই মনে করছেন তারা।
এমসিসি থেকে পদত্যাগ : এদিকে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার পর মেরিলবোন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসির বিশ্ব ক্রিকেট কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে দু’বছর আগে এমসিসিতে যোগ দেওয়ার সম্মান অর্জন করেছিলেন সাকিব আল হাসান।
এমসিসির ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান মাইক গ্যাটিং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘আমাদের কমিটি থেকে সাকিবকে হারানো সত্যিই দুঃখজনক। সাকিব গত কয়েক বছর ধরে কমিটিতে অনন্য অবদান রেখেছেন। ক্রিকেটের অভিভাবক হিসেবে আমরা তার পদত্যাগকে সমর্থন করি এবং এটা সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছি।’