সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীর অভিযোগ ॥ নগরীতে রাস্তা দখলের প্রতিবাদ করায় হামলা, সিসিক-পুলিশের নিরবতা প্রশ্নবিদ্ধ

6

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর মিরাবাজারে এলাকাবাসীর চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি ও রাস্তা দখল করে বাসা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হয়েছেন এক ব্যক্তি। বিষয়টি সিলেট সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসনের নজরে এলেও তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে অভিযোগ যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারীর।
শনিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিরাবাজার উদ্দীপন-১৩ নম্বর বাসার আফতাব মিয়ার মেয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আছিয়া খাতুন।
তিনি অভিযোগ করেন, বছর দুয়েক আগে পাশের উদ্দীপন ১৮/১ বাসাটি নির্মাণ করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে মামুনুর রশিদ। রাস্তা দখল করে বাসা নির্মাণের কারণে এলাকার মানুষের চলাচলে মারাত্মক অসুবিধা সৃষ্টি হয়। সিসিকের নিয়ম না মেনে রাস্তা দখল করে বাসা নির্মাণ করেন মামুনুর রশীদ। রাস্তার দখল ছাড়ার অনুরোধ জানানোর কারণে আমার ভাই সিরাজুল ইসলামের হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১২ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার ভাই সিরাজুল ইসলামের উপর ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা করেন মামুনুর রশীদ। ঘটনার সময় আমার ভাই সিরাজ মিরাবাজার উদ্দীপন ১৩/১ বাসা থেকে বের হওয়া মাত্র ওঁৎপেতে থাকা মামুনুর রশীদ ও অজ্ঞত কয়েকজন সন্ত্রাসী গতিরোধ করে তাকে লোহার রড, ধারালো অস্ত্র ডেগার, রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্ত্রীর সহযোগিতায় মামুন রামদা দিয়ে আমার ভাইয়ের মাথায় আঘাত করে। এতে সে মাথায় ও হাতে গুরুতর জখম হয়। সন্ত্রাসীদের লোহার রডের আঘাতে তার হাতের হাড় ভেঙে যায় এবং সারা শরীরে জখম হয়।’
প্রবাসী এই নারী আরও অভিযোগ করেন, ‘মামুনুর রশিদসহ সঙ্গীয় হামলাকারীরা আমার ভাইয়ের গরু কেনার জন্য পকেটে থাকা নগদ এক লাখ টাকা এবং ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্যামসং এস-১০ স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেয়। হামলাকারীরা আমার ভাইকে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।’
এ ঘটনার পর চিকিৎসা নিয়ে আমার ভাই বাদি হয়ে মামুনুর রশীদসহ অজ্ঞাত ৮/৯ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।
আছিয়া খাতুনের অভিযোগ, পুলিশ সিরাজের মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। বরং, ঘটনার ১৩ দিন পর মামুনুর রশীদ আমার আহত ভাইকে প্রধান আসামি করে এবং আমার বৃদ্ধমাসহ ৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনকে এজাহারভুক্ত করে হত্যার উদ্দেশে হামলা দেখিয়ে মামলা দায়ের করে। হত্যা চেষ্টা করে মামুনুর রশিদ নিজে ভিকটিম সেজে মামলা দায়ের করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নগরীতে বাসা নির্মাণে সিটি করপোরেশনের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। চারদিকে অন্তত ৩ ফুট ছেড়ে বাসা নির্মাণের অনুমোদন দেয় সিসিকের প্রকৌশল শাখা। মামুনুর রশিদ বাসার সীমানা ভেদ করে রাস্তা পর্যন্ত দখল করে নিয়েছেন। এ বিষয়ে সিসিকের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছয়ফুল আলম বাকের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে নিরবতা পালন করেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশনের একজন প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও তিনি কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেননি।’
সিলেট নগরীর সড়ক প্রশস্তকরণে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রের সাহসী ভূমিকা ও মামুনের কর্মকাণ্ডে চুপ থাকাকে সিসিকের বিপরীতমুখী ভূমিকা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রবাসী নারী আরও অভিযোগ করেন, আমরা মামলা দায়ের করলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামুনুর রশীদের তার বাসায় এখনো সস্ত্রাসীদের আনাগোনা রয়েছে।
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে মামুনুর রশীদ ও তার সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি ও পরিবারের লোকজন পৈত্রিক ভিটায় যেতে পারছি না। তার অব্যাহত হুমকিতে আমরা প্রাণনাশের শঙ্কায় রয়েছি।’
আছিয়া খাতুন এ বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ও সিসিকের সুদৃষ্টি কামনা করেন।