কাজিরবাজার ডেস্ক :
আসন্ন জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা উপলক্ষে ২৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে রবিবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপুমনি এ ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, কোচিংয়ের বিষয়ে আমাদের কঠোর হতে হবে। পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হলেও কেউ কেউ বাইরে তালা লাগিয়ে ভেতরে কোচিং করান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে মনিটরিং বাড়াতে হবে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশি সাহাবউদ্দিন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী ২ নবেম্বর থেকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা শুরু হয়ে ১১ নবেম্বর পর্যন্ত চলবে। এ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে ২৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হবে। কোচিং সেন্টার ও নিষিদ্ধ নোট গাইড বইয়ের ব্যবসায়ীরা নিজেদের বাণিজ্য চাঙ্গা করতে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছিল। এজন্য বিগত দু’তিনটি পাবলিক পরীক্ষা চলাকালীন সারাদেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হয়েছিল। এতে অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ পাইনি। বন্ধ হয়েছে প্রশ্নপত্র ফাঁস।
বৈঠক শেষে একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিগত পাবলিক পরীক্ষার মতো এবারও পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে প্রবেশ এবং ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র সেট ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। ৩০ মিনিট আগে না ঢুকতে পারলে তার নাম- রোল লিখে ওই দিন বোর্ডে পাঠাতে হবে। পরীক্ষার তিনদিন আগে প্রশ্ন সর্টিং করতে হবে। একইসঙ্গে প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাচের গাড়ি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা; বেআইনী কোন কাজ করলে সরকারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে সাময়িক বরখাস্ত ও বেসরকারী শিক্ষক হলে এমপিও বাতিল করা হবে।
জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস বা কোন প্রতারণা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সেগুলোকে (সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম) ব্যবহার করে যেন কোন ধরনের প্রশ্নফাঁসের মতো কিংবা প্রতারণার মতো কাজ না করতে পারে অপরাধী চক্র, সে বিষয়ে আমাদের সব গোয়েন্দা সংস্থার তীক্ষè নজরদারি রয়েছে। আমাদের সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। কাজেই যাকে ধরা হবে তাদের বিরুদ্ধে কিন্তু কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা কোচিং বাণিজ্যের লাগাম যত দূর সম্ভব পুরোপুরি টেনে না ধরতে পারা পর্যন্ত আমাদের এই ব্যবস্থা নিতেই হচ্ছে। অভিভাবকদের আহ্বান জানাবো, তারা যেন এই অনৈতিক প্রক্রিয়াতে কোনভাবেই যুক্ত না হন প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে, কারণ তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত কিন্তু এর ওপরে নির্ভর করে।
পরীক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ে দীপু মনি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মতো যেভাবে প্রশ্নফাঁস ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছি, আশা করছি জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষাও একইভাবে সুষ্ঠু, সুন্দর পরিবেশে এবং নকলমুক্তভাবে সম্পন্ন করতে পারব।