আমদানি বাড়লেও কমছে না পেঁয়াজের দাম

14

কাজিরবাজার ডেস্ক :
যত দ্রুত আমদানির পেঁয়াজ আসছে বিপরীতে তত দ্রুত এক লাফে উঠে যাওয়া সেই মূল্য নামছে না। তবে বিভিন্ন স্থানে সর্বোচ্চ কেজিপ্রতি ১২০ টাকা দাম উঠেছিল তা এখন হ্রাস পেয়েছে। তারপরও সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা দামে আমদানির পেঁয়াজ এখনও কেন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হবে তা মুখ্য জিজ্ঞাসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পেঁয়াজের বাজার মনিটরিংয়ে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মহানগরীতে প্রশাসনের মনিটরিং কমিটি, ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান হয়েছে। এমনকি ঢাকায় এক মেয়রও বাজারের গিয়েছেন। তারপরও এক লাফে উঠে যাওয়া সেই দর এখনও হ্রাস পায়নি। যা রীতিমতো বিস্ময়কর। এদিকে, রফতানি বন্ধ ঘোষণার আগে এলসিকৃত আমদানির পেঁয়াজ শুক্রবার থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে, মিয়ানমার থেকে ছোট ও বড় আকৃতির ট্রলারযোগে টনে টনে পেঁয়াজ আসছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এসেছে সাড়ে ৫ হাজার টন। এছাড়া আরও ৪৪২ টন এখন টেকনাফ স্থলবন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব পেঁয়াজ আসছে মিয়ানমারের সিটওয়ে বন্দর হয়ে।
মিয়ানমারের পেঁয়াজ চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার হামিদুল্লাহ বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে। কিন্তু সে তুলনায় দাম আগের স্থানে নেমে আসেনি। এছাড়া প্রতিদিন ট্রাকযোগে মিয়ানমারের পেঁয়াজ চট্টগ্রাম হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবাহিত হচ্ছে।
হঠাৎ করে পেঁয়াজের আকস্মিক অতিপরিমাণ বৃদ্ধি ঘটনার নেপথ্যে ভারতীয় ও এদেশীয় রফতানি এবং আমদানিকারকদের একটি সিন্ডিকেট জড়িত বলে তথ্য মিলেছে। নিমিষেই তথ্য আদান-প্রদানের সুযোগে ভারতীয় রফতানিকারকরা এদেশীয় আমদানিকারকদের কাছে পণ্য রফতানিতে কি হতে যাচ্ছে সে তথ্য পৌঁছে দিয়ে থাকে। অনুরূপভাবে পেঁয়াজের ঘটনাটিও সেভাবে ঘটেছে। রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হতে যাচ্ছে এমন তথ্য বাংলাদেশী আমদানিকারকরা ওই দিন আগেভাগে পেয়ে যায়। ফলে এর আগের দু’সপ্তাহ থেকে উর্ধমুখী পেঁয়াজের মূল্য এক লাফে কোথাও ৮০, কোথাও ৯০, কোথাও শত টাকা পৌঁছে যায়। সর্বত্র পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখিতার বিষয়টি আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়। অথচ, এই পেঁয়াজ এমন কোন ভোগ্যপণ্য নয় যে, এটি পাওয়া না গেলে মারাত্মক কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হবে। এরপরও এ ঘটনায় রীতিমতো হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়ে যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পেঁয়াজ চলে আসে টেকনাফের স্থলবন্দরে। অপরদিকে, স্বাভাবিক আমদানির পেঁয়াজও চলে আসে মিসর ও তুরস্ক থেকে। এখন আমদানির পাইপ লাইনে পেঁয়াজের বহু চালান রয়েছে, যাতে চীন থেকেও চালান আসার কথা রয়েছে। আর এছাড়া প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে প্রতি ট্রলারে দেড় শ’ টন হারে একাধিক চালান বাংলাদেশে আসছে। সে হিসাবে উর্ধমূল্যের পেঁয়াজ একই অবস্থানে থাকার কথা নয় সঙ্গত কারণে, বিভিন্ন সূত্রে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, পেঁয়াজ আমদানি ও পাইকারি বিক্রির সঙ্গে জড়িত এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দরপতনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রেখেছে। ফলে পেঁয়াজের দামের হ্রাসের গতি একেবারেই স্লো দেখা গেছে শুক্রবার।