বিশ্বনাথের নিখোঁজ ফরিদের লাশ পাওয়া গেল স্লোভাকিয়ার জঙ্গলে

20
নিহত ফরিদ উদ্দিন।

জাহাঙ্গীর আলম খায়ের বিশ^নাথ থেকে :
অবশেষে নিখোঁজের ১১ দিন পর সাবেক ব্যাংক কর্মকতা ফরিদ উদ্দিন আহমদের (৩৫) লাশ স্লোভাকিয়ার স্টরিনা নামক জঙ্গলে পাওয়া গেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর ইউক্রেন থেকে ফ্রান্স যাবার পথে স্লোভাকিয়ার ওই জঙ্গল থেকে নিখোঁজ হন তিনি। নিহত ফরিদ বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের পাশর্^বর্তি কারিকোনা গ্রামের সমশাদ আলী ও সমরুন নেছা দম্পতির বড় ছেলে। বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহর থেকে ফরিদের চাচা আলকাছ আলী আওলাদ সে দেশে গিয়ে ফরিদের লাশ শনাক্ত করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাড়িতে থাকা নিহত ফরিদের চাচাতো ভাই হাবিব আহমদ।
হাবিব জানান, লন্ডনে থাকা তাদের এক আত্মীয় স্লোভাকিয়ার একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ দেখে নিখোঁজ ফরিদের চাচা আলকাছ আলীকে জানান। তারপর ই-মেইলের মাধ্যমে সে দেশের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আলকাছ আলীর বন্ধু লন্ডনের সিআইডি পুলিশ মুন্নী আক্তার। পরবর্তিতে সিআইডি পুলিশ মুন্নিকে সঙ্গে নিয়ে স্লোভাকিয়ায় গিয়ে সে দেশের পুলিশের সহায়তায় ফরিদেও লাশ শনাক্ত করেন।
এদিকে নিহত ফরিদের লাশ সনাক্ত করার খবরে তার পরিবারের পাশাপাশি কারিকোনা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার অপর ৫ভাই ও এক বোনসহ পরিবারের সদস্যরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। আর ফরিদের ষাটোর্ধ বাবা ও পঞ্চাশোর্ধ মা ছেলের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। অন্যদিকে ফরিদের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা সেলিনা বেগম ৩বছর বয়সী ইরা তাসফিয়া নামের একমাত্র শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে নিরবে চোঁখের পানি ফেলছেন।
চুক্তি ভঙ্গ করে তার ছেলেকে দালাল মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন নিহত ফরিদের বাবা সমশাদ আলী। তার সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে প্রথমে রাশিয়া যান ফরিদ। খেলা শেষ হওয়ার মাস খানেক পর তিনি রাশিয়ায় অবস্থানরত লিটন বড়–যার সঙ্গে ৭লাখ টাকার চুক্তিতে প্রথমে ইউক্রেন যান। আর চুক্তিমতে তার পরিবার লিটন বড়–য়ার সহকর্মী সিলেটের বিয়ানী বাজারের কামাল আহমদের কাছে টাকা জমা রাখেন। ইউক্রেনে কয়েক মাস অবস্থান করার পর গত ১ সেপ্টেম্বর চুক্তি অনুযায়ী ওই দালালের মাধ্যমে ইউক্রেন থেকে ফ্রান্স যাত্রা করেন। কিন্তু তার অপর পাঁচ সঙ্গী ও দালাল ফ্রান্সে গিয়ে পৌঁছলেও যাত্রাপথে স্লোভাকিয়ার জঙ্গলে নিখোঁজ হন তিনি।