জাহাঙ্গীর আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
দাফনের ২৯ দিনের মাথায় আদালতের নির্দেশে কবর থেকে আয়ফুল বেগম (৫৫) নামের সেই নারীর লাশ উত্তোলন করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। গতকাল সোমবার সকালে দোহাল পঞ্চায়েতি কবর থেকে লাশ উত্তোলনের পর দুপুরে ময়না তদন্তের জন্য সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লাশ উত্তেলনের সময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরা। এর আগে গত ৪ আগষ্ট রোববার রাতে জানাযার নামাজ শেষে আয়ফুল বেগমের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়। আগেরদিন শনিবার রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে নিজ কক্ষে ঘুমের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। নিহত আয়ফুল উপজেলার দোহাল গ্রামের মৃত রিফাত উল্লাহর মেয়ে।
লাশ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা। তিসি এ প্রতিবেদককে বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে ওই নারীর লাশ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে দাফনের তিনদিন পর গত ৮ আগষ্ট বৃহস্পতিবার মাকে হত্যার অভিযোগ এনে বিশ্বনাথ থানায় মামলা করেন তার বড় মেয়ে নাসিমা বেগম (৩০)। আর মামলায় নাসিমা তার মামাতো বোনের স্বামী নুর উদ্দিনকে (৩৫) একমাত্র আসামি করেন, (মামলা নং ৯)। ওইদিন রাতে অভিযুক্ত নুর উদ্দিনকে গ্রেফতারের পর শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নাসিমার দুই মামা মখলিছ আলী (৬০) ও ইলিয়াস আলীকেও (৪২) ৫৪ ধারায় জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।
নাসিমার অভিযোগ, নুর উদ্দিন (৩৫) নামের মামাতোবোন রেসনার স্বামী তার মাকে দেখাশুনা করতেন। গত ৩ আগষ্ট শনিবার রাতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার পর তার মায়ের কাছে থাকা নগদ একলাখ টাকাও চুরি করেছেন নিয়েছেন নুর উদ্দিন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩৫ বছর আগে আয়ফুল বেগমের প্রথম বিয়ে হয় বিশ্বনাথের জানাইয়া গ্রামের আব্দুল খালিকের সঙ্গে। তার পর আব্দুশ শহীদ (২৮) ও নাসিমা বেগমের ( ৩০)। জন্ম হয়। আব্দুশ শহীদ বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। আর নাসিমা বেগমকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে উপজেলার ছোটখুরমা গ্রামের আরশ আলীর কাছে। অন্যদিকে প্রথম স্বামী আব্দুল খালিক মারা যাবার পর আয়ফুল বেগমের ২য় বিয়ে হয় ছাতকের ভাওয়াল গ্রামের ফজর আলীর সঙ্গে। এরপর লিলু মিয়া নামের এক ছেলে ও কলসুমা নামের এক মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। পরবর্তিতে স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি বাবার বাড়ি দোহালেই বসবাস করছেন। আর তার দেখাশুনা করেন আয়ফুলের ছোটভাই মকবুল হোসেনের বড়মেয়ে রেসনা বেগমের স্বামী নুর উদ্দিন। গত ২৮ জুলাই রোববার ঘর নির্মাণের জন্য ভাইজির স্বামী নুর উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যুরো বাংলাদেশ বিশ্বনাথ শাখা থেকে নগদ এক লাখ টাকা লোন নেন আয়ফুল বেগম। এর ৪দিনের মাথায় গত ৩ আগষ্ট শনিবার রাতে ঘুমের মধ্যেই মারা যান তিনি। আর সেই সাথে নগদ এক লাখ টাকাও উদাও হয়ে যায়।