কাজিরবাজার ডেস্ক :
মাঝপথেই আটকে দেয়া হলো প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। উত্তর প্রদেশে জমি নিয়ে সংঘর্ষে গুলিতে নিহত ১০ জনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর আগেই তাকে আটকে দেয়া হয়। এ সময় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। রাজ্যে ক্রমেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে এবং অপরাধ বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন প্রিয়াঙ্কা। সোনভদ্রায় যাওয়ার পথে তাকে আটকে দেয়া হলে মির্জাপুরের রাস্তাতেই বসে পড়েন পূর্ব-উত্তর প্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেত্রী। প্রিয়াঙ্কার পাশেই বসে পড়েন তার সঙ্গে থাকা অন্য কংগ্রেস কর্মীরা। তাদের ঘিরে থাকেন প্রিয়াঙ্কার নিরাপত্তারক্ষীরা। পরে তাকে একটি সরকারী গাড়িতে করে গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। যখন তাকে সরকারী কর্মকর্তার গাড়িতে করে সরিয়ে নেয়া হয়, এ সময় তিনি বলেন, আমি জানি না, তারা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, আমরা যে কোন জায়গায় যেতে প্রস্তুত। অধেশ পান্ডে নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন যে, প্রিয়াঙ্কাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। যে গেস্ট হাউসে প্রিয়াঙ্কাকে নেয়া হয়, সেখানে তিনি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমি শুধু সোনভদ্রায় যেতে চেয়েছিলাম, যাতে সেখানকার জনগণ নিজেদের একাকী না মনে করে। আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং এখানে আনা হয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে দেখা না করা পর্যন্ত আমি এখান থেকে যাব না। প্রিয়াঙ্কার আটকের ঘটনাকে তার ভাই রাহুল গান্ধী উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেন। এক টুইটে রাহুল বলেন, উত্তর প্রদেশের সোনভদ্রা থেকে প্রিয়াঙ্কার অবৈধ গ্রেফতার উদ্বেগজনক। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন, যাদের নির্মমভাবে মেরে ফেলা হয়েছে, আমি শুধু তাদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চেয়েছিলাম। আমার ছেলের বয়সী একটি ছেলেকেও গুলি করা হয়েছে এবং সে এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। আমাকে বলুন, কোন্ আইনে আমাকে এভাবে আটকে দেয়া হলো। প্রিয়াঙ্কার ওই এলাকায় পৌঁছনোর আগেই জানা যায় যে, সোনভদ্রায় যে কোন রকম জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে, তাকে বলা হয়েছে যে, তিনি গাড়িতে করে বারানসি থেকে সোনভদ্রা যেতে পারবেন না। তিনি বলেন, আমি এখানেই শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসেছি, কেউ আমাকে ওই নির্দেশ দেখাক। শুক্রবার সকালেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লোকসভা কেন্দ্র বারানসিতে পৌঁছান প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সেখান থেকে তিনি সোনভদ্রার ঘটনায় আহতদের দেখতে স্থানীয় হাসপাতালে যান। বুধবার উত্তর প্রদেশের সোনভদ্রায় গুর্জর এবং গোন্ডা সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি জমি নিয়ে সংঘর্ষ বাধলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের এবং আরও ২৪ জন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামপ্রধান যগদূত ও তার ভাইদেরসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।