কাজিরবাজার ডেস্ক :
মুক্তিযুদ্ধ না করেও সনদ নিয়েছেন এমন তিন হাজার ১০৭ জন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
শনিবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এই তথ্য জানান।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
এসময় মন্ত্রী সংসদকে জানান, গত ১০ বছরে বাদ পড়া চার হাজার ১৮৮ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম গেজেটভুক্তির জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের একই দিনে জিজিটাল সনদ দেয়া হবে। সব মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে করা হবে।
এছাড়া বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর সংসদ চত্বর থেকে অপসারণের দাবি জানান।
মুক্তিযোদ্ধামন্ত্রী বলেন, ‘সংসদের মূল নকশার বাইরে জিয়ার কবরসহ আরও কয়েকজনের কবর রয়েছে সেগুলো অপসরাণ করার অনুরোধ করছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে আত্মস্বীকৃতি খুনিদের পদায়ন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল।’
নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে আমাদের প্রত্যাশা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১৫ হাজার করা, সেটা ১২ হাজার করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে হয়তো হবে। এরইমধ্যে উৎসব ভাতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর দাফনের টাকাও দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে দাফনের পূর্বে টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের একই ডিজাইনে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেন মানুষ কবর দেখলেই বুঝতে পারেন এটা মুক্তিযোদ্ধার কবর। অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। যার নামে বাড়ি বরাদ্দ হবে তিনিই হবেন প্রকৃত মালিক। এছাড়া জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের ১০ মিনিটের বক্তব্য রেকর্ড সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই না যেসব জায়গায় সন্মুখযুদ্ধ হয়েছে সেগুলো একই নকশায় সংরক্ষণ করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ডাটাবেজে মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তিবার্তা, সাময়িক সনদসহ বিভিন্ন ধরনের গেজেট ডিজিটাইজেশন করা তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। যা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য বাতায়নে রয়েছে। দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট বা পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুকূলে ডিজিটাল সনদ দেওয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। অচিরেই সারাদেশে একদিনে একযোগে মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ দেওয়া হবে।’