শাস্তির ভয়ে মাদ্রাসা থেকে পালানো ১২ শিক্ষার্থী উদ্ধার

22

শ্রীমঙ্গল থেকে সংবাদদাতা :
শ্রীমঙ্গলে গাঙ্গের ছড়ায় লাফিয়ে গোসল করার অপরাধে মাদ্রাসার শিক্ষকের হাতে শাস্তি পাবার ভয়ে পালিয়ে যাওয়া ১২ শিশু শিক্ষার্থীকে এক অভিভাবকের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী শ্রীমঙ্গল শহরতলীর মুসলিম রমিজা খাতুন ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও নোয়াগাঁও হক্কুুল ছুরত এতিমখানার নিবাসী।
শিক্ষার্থীরা হলো- মো. তানভীর আহমেদ, মো. রুহিন আহমেদ, মো. আবু ছাইদ, মো. হৃদয় আহমেদ ছাব্বির, সাইদুল ইসলাম, মো. রাব্বি আহম্মেদ, মো. আরিফুল ইসলাম, মো. ইমাদ উদ্দিন, মো. কাওসার মিয়া, মো. সামাদ মিয়া, মো. ছায়মন মিয়া ও মো. ইমন মিয়া। এরা সবাই ওই মাদ্রসার কুরআনে হিফজ বিভাগের ছাত্র।
বুধবার দুপুরে সরেজমিন ওই মাদ্রসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে ২০০৯ সালে এই মাদ্রসা প্রতিষ্ঠা করেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মো.আইয়ুব আলী খান। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে মোট ১৪ জন শিক্ষার্থী কুরআনে হিফজ বিভাগে পড়াশুনা করেন।
গত মঙ্গলবার দুপুরে মাদ্রাসার নামাজের বিরতি সময় ১২জন শিক্ষার্থীরা মিলে মাদ্রাসার প্রবেশ পথের জাগছড়া গাঙ্গের ১৫ ফুট উপরে একটি ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পরে গোসল করছিলো। তখন যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মো. জুয়েল মিয়া বিষয়টি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মো.আইয়ুব আলী খানকে মুঠোফোনে জানালে শিক্ষার্থীরা শাস্তির ভয়ে দুপুরে মাদ্রাসার যাওয়ার উল্টোপথে পালিয়ে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে যায়। সেখান থেকে তারা সিলেটগামী ট্রেনে করে কমলগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে নেমে পরে। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা কমলগঞ্জ রাজটিলা গ্রামের এক সহপাঠি শিক্ষার্থী ইমন আহমেদের মামা মো. হায়দর মিয়ার সঙ্গে সন্ধ্যার দিকে কমলগঞ্জ রেলগেইট জামে মসজিদের সামনে তাদের দেখা হলে তিনি সবাইকে রেলস্টেশনের পাশের একটি দোকানে নিয়ে বসান। এরপর মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে আসার ঘটনাটি তার কাছে খুলে বলে শিক্ষার্থীরা।
বিষয়টি তিনি ওইদিন সন্ধ্যার পর পর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. আইয়ুব আলীকে জানান। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ শিক্ষার্থীদের থানায় নিয়ে যান। পরে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল কমলগঞ্জ থানায় গিয়ে পালিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পরিচয় দিয়ে রাত ১২টায় মাদ্রাসায় ফিরিয়ে আনেন।
জানতে চাইলে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মো.আইয়ুব আলী খান মুঠোফোনে বলেন, শিক্ষার্থীদের মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে মাদ্রাসায় না পেয়ে আমি কমলগঞ্জের এক শিক্ষার্থী ইমনের মামাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই এবং তারা কোথায় গেল বিভিন্ন দিকে খোঁজখবর নেই। সন্ধ্যার দিকে হায়দর মিয়া ১২ জন শিক্ষার্থীকে কমলগঞ্জ রেলস্টেশনে পাওয়া গেছে বলে জানান। এর মধ্যেই ঘটনাটি ছড়িয়ে পরলে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ শিক্ষার্থীদের থানায় নিয়ে যান। পরে রাত ১২টায় কমলগঞ্জ থানা থেকে শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় ফিরিয়ে আনি। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা রেলে চড়ার জন্য কমলগঞ্জ গিয়েছিল।