কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে যত হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড রাব, জীবাণুনাশক স্প্রে আছে সেগুলোর মোড়কে সতর্কীকরণ যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি তারিকুল হাকিমের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড রাব, জীবাণুনাশক স্প্রে বা এ জাতীয় পণ্য আইসোপ্রোপাইল-অ্যালকোহল, ইথানল অ্যালকোহল, ক্লোরক্সাইলেনলসহ ইত্যাদি রাসায়নিক দাহ্য উপাদান দিয়ে তৈরি।
হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বড় পাত্র থেকে ছোট পাত্রে নেয়ার সময় সিগারেট থেকে আগুন লাগে। কয়েকদিন কয়েক দিন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকার পর মারা গেছেন চিকিৎসক রাজিব ভট্টাচার্য। তার স্ত্রীর অবস্থাও গুরুতর।
করোনার কারণে এসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। সেই সুযোগে অনেক প্রতিষ্ঠান দামও বাড়িয়ে দিয়েছি। অন্যদিকে মানহীন অনেক প্রতিষ্ঠান এসব হ্যান্ড স্যানিটাইজার যত্রযত্র বিক্রি করছে। এ ধরনের পণ্যের বোতল বা মোড়কে ‘সতর্কীকরণ’ নির্দেশনাও থাকে না।
পণ্যের মোড়কে সতর্কীকরণ নির্দেশনা যুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করে জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন আইনজীবী মো. মাহফুজুর রহমান মিলন।
রিট আবেদনে বলা হয়, দাহ্য উপদান দিয়ে তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড রব,জীবাণুনাশক স্প্রে বাজারজাত বা বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ‘সতর্কীকরণ’ বা ‘সতর্কতা নির্দেশনা’ দেয়া হচ্ছে না।
রিটকারী আইনজীবী নিজেই আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়েম মোহাম্মদ মুরাদ।
মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘অগ্নিদগ্ধ হওয়ার সাত দিন পর গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক রাজিব ভট্টাচার্য মারা গেছেন। সংবাদ মাধ্যমে এসেছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তার অগ্নিদগ্ধ হওয়ার বড় কারণ। তার স্ত্রীও দগ্ধ হয়েছেন। অথচ এসব হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড রাব বা জীবাণুনাশক স্প্রে দাহ্য উপাদান তৈরি করা হলেও এগুলোর কোনোটার গায়ে কোনো সতর্কীকরণ নির্দেশনা নাই। বলা নাই যে, এটা দাহ্য বস্তু আগুন থেকে দূরে রাখুন ‘
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্প্রের ব্যবহার অনেক গুণ বেড়েছে। তাই সতর্কীকরণ দিয়ে ব্যবহারকরীকে সচেতন না করলে এই দুর্ঘটনা আরও বাড়তে পারে। যে কারও বেলায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যে কারণে জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করা হয়েছে।
রিট আবেদনে আরও বলা হয়, ওষুধ আইন ১৯৪০ এর বিধি ৩৩ ও ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর বিধি ২৫ অনুযায়ী এ জাতীয় পণ্যের গায়ে ‘সতর্কীকরণ’ বা ‘সতর্কতা নির্দেশনা’ দেয়ার বিধান রয়েছে। ফলে ‘সতর্কীকরণ’ বা ‘সতর্কতা নির্দেশনা’ না দেয়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯, ওষুধ আইন ১৯৪০ ও ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।