হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সম্প্রতি অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সোনাই নদীর তীর মাধবপুর দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলের গ্রামে পানি প্রবেশ করে গ্রামীণ অবকাঠামো, রাস্তাঘাট, কৃষকের ফসলের ক্ষতিসহ মৎস চাষিদের পুকুর তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে অনেক কৃষক ও মৎস চাষি তাদের পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন কৃষক ও মৎস চাষিরা। সরকারিভাবে ৪ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং রাস্তাঘাট মেরামত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় খুব কম বলে দাবি করেছেন কৃষকরা।
রাস্তাঘাট বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলের মানুষ। চৌমুহনী এলাকার কৃষক জুয়েল মিয়া জানান, সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলে সোনাই নদীর আলাবক্সপুর নামক স্থানে বড় ধরনের ভাঙনে কমলানগর, হরিণখোলা, রামপুর, মনোহরপুর, কমলপুর, দেবীপুর, নুরুল্লাপুর গ্রামে প্রবল গ্রোতে পানি প্রবেশ করে পুকুরে মাছ, গ্রামীন কাঁচা পাকা রাস্তা ও বেশ কয়েকটি ছোট ব্রিজ গ্রোতের তোড়ে ভেঙ্গ গেছে। এতে জন দুর্ভোগ বেড়েছে।
চৌমুহনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আপন মিয়া জানান, এর আগে পাহাড়ি ঢলে চৌমুহনী এলাকার এমন ক্ষতি হয়নি। প্রতিটি গ্রামের ছোট বড় রাস্তা বানের পানিতে ভেঙে গেছে। রাস্তা গুলো দ্রুত মেরামতের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হয়েছে।
শাহজাহানপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার জালুয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ খান জানান, সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড জালুয়াবাদ, নোয়াগাঁও এলাকায় ত্রিপুরা নদী খনন করেছে। কিন্তু রেল লাইনের পশ্চিম পাশে কোটানিয়া দিঘিরপাড় এলাকায় নদীর ভাটি এলাকা খনন না করায় সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলে বন্যায় বড় ধরনের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে জালুয়াবাদ, নোয়াগাঁও, লোহাইদ ,ভান্ডারুয়া বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে কাঁচা ঘর বাড়ি ও রাস্তাঘাট ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শাহজাহানপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তৌফিকুল আলম চৌধুরী জানান- শাহপুর, জালুয়াবাদ, নোয়াগাঁও গ্রামের রাস্তাঘাট বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । বহরা, আন্দিউড়া, আদাঐর ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে পানি প্রবেশ করে গ্রামীন অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
মনতলা অপরূপা বালিকা বিদ্যায়তনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বাহার জানান, সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলে সোনাই নদী ভাঙনে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মাধবপুরে সম্প্রতি পাহাড়ি ঢল ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্নবাসনের জন্য মাধবপুর চুনারুঘাট আসনের সংসদ সদস্য বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী স্থানীয় প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেন।
মাধবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুল ইসলাম জানান, মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদেরকে আপাতত ৪ মেঃ টন চাল ও ঘর হারাদেরকে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১০০ বান্ডিল ঢেউ টিনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। গ্রামীন ভাঙা রাস্তা বিশেষ টি আর এর মাধ্যমে মেরামতেরও কাজ চলছে ।