মোদির কাছে নয়া মন্ত্রী সভার তালিকা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি

26

কাজিরবাজার ডেস্ক :
লোকসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পার্লামেন্ট সদস্যদের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদিকে শনিবার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। এক টুইট বার্তায় প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ বলেছেন, নরেন্দ্র মোদিকে নতুন মন্ত্রী সভার সদস্যদের নামের তালিকা ও নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের দিন ঠিক করে পাঠাতে বলা হয়েছে। এর আগে শনিবার রাতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করেন মোদি ও তার জোটসঙ্গীরা। এদিকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর পদত্যাগের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দলে আমূল পরিবর্তন আনতে রাহুলকে কংগ্রেস নেতারা আহ্বান জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের ৫৪৩ আসনের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ৩৫১ আসনে জয় নিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। শনিবার পার্লামেন্ট ভবনের সেন্টার হলে এনডিএ জোটের আইন প্রণেতাদের বৈঠকে নেতা নির্বাচিত হন নরেন্দ্র মোদি। পরে ওইদিন রাতেই তিনি জোটসঙ্গীদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাত করে সরকার গঠনের দাবি করেন। পরে রাষ্ট্রপতি তাকে শপথ দিন নির্ধারণ ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম পাঠাতে বলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, আগামী ৩০ মে বৃহস্পতিবার শপথ নিতে পারে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় সরকার। সমালোচকরা বলছেন, মোদি এবং তার দল বিভাজন তৈরিকারী নীতি ও হিন্দুত্ববাদই প্রথম এমন কৌশল ব্যবহার করেছে। তবে শনিবার মোদি বলেছেন, ‘এই নির্বাচন সামাজিক ঐক্যের এক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে’। আইন প্রণেতাদের বৈঠকে মোদি বলেন, সাধারণভাবে বলা হয় নির্বাচন বিভাজন তৈরি করে, দূরত্ব সৃষ্টি করে, দেওয়াল বানায়। কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচন সেই দেওয়াল ভাঙ্গার কাজ করেছে। ভারতের নির্বাচনে মোদির বিজয় সাধারণত হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ওপর সমর্থন বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে। তবে কোন কোন বিশ্লেষক বলছেন, গত পাঁচ বছরে মোদির সমর্থকরা মুসলমানসহ অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অসহিষ্ণুতার চর্চা করেছেন। প্রতিবেশী পাকিস্তানের ওপরও পেশিশক্তি প্রয়োগ করেছেন মোদি। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর এক হামলার জেরে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। লোকসভা নির্বাচনী প্রচারে ওই ঘটনা কার্যকরভাবে ব্যবহার করে মোদির বিজেপি। বিজেপির পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হয় মোদির হাতেই ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সুরক্ষিত থাকবে।
দলে আমূল পরিবর্তন আনতে রাহুলকে কংগ্রেস নেতাদের আহ্বান : ভারতের কংগ্রেস পার্টির অভ্যন্তরে আমূল পরিবর্তন আনার জন্য সভাপতি রাহুল গান্ধীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা। সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে দলের শোচনীয় পরাজয়ের পর শনিবার কমিটির বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়। তবে এদিন সভাপতি হিসেবে রাহুলের পদত্যাগের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শোচনীয় পরাজয় হয়েছে রাহুলের দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ববর্তী লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার আসন সংখ্যা আরও বাড়িয়েছে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি। গতবার এককভাবে ২৮২ আসন পাওয়া এ দলটি এবার পেয়েছে ৩০৩টি আসন। আর কংগ্রেস পার্টি আগেরবারের চেয়ে ৮টি আসন বেশি পেলেও পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার মতো প্রয়োজনীয় আসন পূরণ করতে পারেনি। পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার জন্য একটি দলকে মোট আসনের অন্তত ১০ ভাগ আসনে জিততে হয়। দ্বিতীয়বারের মতো দলের এ শোচনীয় পরাজয়ের পর শনিবার বৈঠক করেছে কংগ্রেস পার্টির কার্যনির্বাহী কমিটি। এদিন সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন রাহুল। তবে তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। বরং সভাপতি পদে বহাল থেকে দলের ভেতরে আমূল পরিবর্তন আনার জন্য রাহুলের প্রতি আহ্বান জানান ওয়ার্কিং কমিটির নেতারা। কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের পর কংগ্রেস পার্টির মুখপাত্র রণদ্বীপ সুরজেওয়ালা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ চ্যালেঞ্জিং সময়ে দল পরিচালনার জন্য আমাদের রাহুল গান্ধীকে প্রয়োজন। নির্বাচনে পরাজয়ের বিষয়টিকে গুরুতরভাবে খতিয়ে দেখা হবে।