স্টাফ রিপোর্টার :
মানবপাচারের অভিযোগে ঢাকায় র্যাবের হাতে আটক সিলেটের ইয়াহিয়া ওভারসিজের মালিক এনামুল হক তালুকদারসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভূমধ্যসাগরে নিহত আব্দুল আজিজের ভাই মফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এরই মধ্যে ঢাকায় এনামকে আটক করেছে র্যাব। আটক এনাম গোলাপগঞ্জ উপজেলার পনাইরচক গ্রামের বাসিন্দা।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন-একই উপজেলার হাওরতলা গ্রামের ইলিয়াস মিয়ার পুত্র জায়েদ আহমেদ, ঢাকার রাজ্জাক হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মঞ্জুর ইসলাম ওরফে গুডলাক ও অজ্ঞাত ১০ থেকে ১৫ জন।
ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলাটি করা হয়েছে।
মফিজ উদ্দিন মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার ছোট ভাই আব্দুল আজিজকে ইতালি পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৮ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিলো। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ১০ মে পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আসামিরা নানাভাবে তার কাছ এ টাকা আদায় করে। এ ছাড়া আসামিরা আজিজ ও আরও কয়েকজনকে লিবিয়ায় আটকে রেখে মারধর করে এবং দেশে পরিবারের কাছ থেকে ৮ লাখের পরিবর্তে ১০ লাখ টাকা আদায় করে।
গত ৯ মে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়া উপকূলে ৮০ অভিবাসীবাহী একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৩৯ জন বাংলাদেশি নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ ৩৯ বাংলাদেশির মধ্যে ২৭ জনেই সিলেটের বাসিন্দা। আর এ ২৭জনের মধ্যে ৪ জনের বাড়ি ফেঞ্চুগঞ্জে।
এদিকে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এনামুল, রাজ্জাকসহ ৩জনকে আটক করেছে র্যাব। আটক ৩জনের বিষয়ে ঢাকায় প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, তারা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ এ অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে। এ সংঘবদ্ধ চক্রটি বিদেশি চক্রের যোগসাজশে অবৈধভাবে ইউরোপে লোক পাঠিয়ে আসছে। র্যাব জানায়, পাচারের শিকার মানুষগুলোকে ওই সিন্ডিকেট সমুদ্রপথে নৌযান চালনা, সমুদ্রে দিক নির্ণয় যন্ত্র ব্যবহারসহ কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে নৌকায় তুলে দেয়। তিউনিশিয়া চ্যানেল হয়ে ইউরোপের দিকে রওনা দেয় তারা। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পথে যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।