স্টাফ রিপোর্টার :
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের চেয়ে দুর্বল দল বাংলাদেশে নেই। তারা জনগণকে ভয় পায়। মানুষের রায়ে তাদের আস্থা নেই। ভোটের নামে প্রহসন করে তারা রাতে ও ভোটের দিনে বাক্স ভরে ক্ষমতায় গেছে। গতকাল সোমবার বিকেলে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নগরীর মীরের ময়দানস্থ একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে কারান্তরীণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, গুম নামক অপরাজনীতির ভয়াবহতা ও অবরুদ্ধ গণতন্ত্র শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ নানা ফন্দিতে আজীবন ক্ষমতায় থাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে স্বৈরাচারী সরকারের মতো গুম, খুন আর নৈরাজ্য চালানো হচ্ছে দেশজুড়ে। বিএনপি নেতাদের মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করে ক্ষমতায় টিকে থাকার প্রকল্পকে পাকাপোক্ত করছে তারা।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাহির চৌধুরীর সভাপতিত্বে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা বিদেশী চাপে বারবার খালেদার প্যারেল মুক্তির বিষয়টি বলছেন। বিএনপি চাইলে তারা নাকি বিষয়টি বিবেচনা করবেন। কিন্তু আমরা তো খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি চাইনি। কেন বারবার তারা এ কথা বলছেন। এতেই স্পষ্ট হচ্ছে খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে। এখন বিদেশী চাপে প্যারোলে মুক্তির কথা বলছেন।
অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এমন নিষ্টুর, হৃদয়হীন, ক্ষমতাপিপাসু সরকার জাতি আর কখনো দেখেনি। মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে যাদের লজ্জাবোধ নেই তাদের মুখে উন্নয়ন আর মানবতার ভুলি শুনলে হাসি পায়। ব্যর্থতা আমাদেরও আছে। ৩০ ডিসেম্বরের ভোট চুরির নির্বাচনের পর লাগাতার হরতাল অবরোধ পালন করলে এই ভোট ডাকাত সরকার শপথ নিতে পারতো না। তিনি বলেন, আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে আমরা একটা কঠিন শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছি। গুমকৃত পরিবার গুলোর সদস্যরা যখন প্রশ্ন করে আমরা কি দোয়া করবো। ফিরে আসার নিশ্চয়তা থাকলে সুস্থতার আর মৃত হলে মাগফেরাতের জন্য মোনাজাত করবো। কিন্তু এমন কঠিন প্রশ্নের জবাব আমার রাষ্ট্র সরকার দিতে পারেনা। আর পারবেও না। কারণ তারা আদর্শিক মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছে বলেই গুম ও ক্ষমতা দখলের রাজনীতি করছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা। সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক, পেশাজীবি নেতৃবৃন্দসহ দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় আবেগঘন বক্তব্য রাখেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর বড় ছেলে ব্যারিষ্টার আবরার ইলিয়াস, ইফতেখার আহমদ দিনারের বাবা ডাঃ মঈনুদ্দিন, জুনেদ আহমদের ছোট ভাই হাসান মঈনুদ্দিন আহমদ ও আনসার আলীর স্ত্রী মুক্তা বেগম।
সভায় প্রখ্যাত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ ও বিএনপির অন্যতম শীর্ষ নেতা সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তাদের মাগফেরাত কামনা করা হয়।
জেলা ওলামা দলের সভাপতি মুফতী মাওলানা সাদিকুর রহমানের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি আলহাজ্ব শফি আহমদ চৌধুরী, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহমেদ, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ সিলেট জেলা সভাপতি ডাঃ শামীমুর রহমান, সিলেট মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী প্রমুখ।