বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
দীর্ঘ মেয়াদি খরার কারণে বোরো ধানে চিটা দেখা দিয়েছে সেই সাথে মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাওয়ায় আশানুরূপ ফলন হচ্ছেনা জমিতে। আগামী দু’একদিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে কিন্তু ফলন বিপর্যয়ের আশংকায় হাসি নেই কৃষকের মুখে। প্রকৃতির এ অবস্থা আরও কিছুদিন বিরাজমান থাকলে চলতি বছর ধান উৎপাদন কম হবে সেই সাথে অর্জিত হবে না লক্ষ্যমাত্রা। এমনটাই জানা গেলে স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার শনি, মাটিয়ান, মহালিয়া, লোবা হাওর সহ ২৩টি ছোট বড় হাওরে ১৮ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। সময় মত পানি চলে যাওয়া চলতি বছর কৃষক একটু আগাম রোপণ করেছিল বোরো ধান। কৃষক আশা করেছিলেন এবার ফলন ভালো হবে এবং যথা সময়ে ধান কেটে গোলায় তুলবেন। কিন্তু প্রকৃতি বৈরী থাকায় দীর্ঘদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জমিতে পানি সংকট দেখা দেয় অনেকদিন থেকেই। তাছাড়া সেচে পানি দেয়ারও কোন ব্যবস্থা না থাকায় হাওরে-হাওরে অধিকাংশ জমির মাটি শুকিয়ে যায়। আর শুকিয়ে যাওয়া মাটিতে রোপণকৃত ধান গাছ ফলনের পরিবর্তে অনেকটা জিমিয়ে পরে ধান গাছের পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করে পাতা মরে যায়।
সরজমিন শনির হাওরে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র, ধানের পাতাগুলো পানির অভাবে মরে যাচ্ছে। ধানের যে শিষ গুলো বের হয়েছে তার মধ্যে কিছু ধান কালো বর্ণ ধারণ করেছে। কৃষক জানান, কালো বর্ণের ধানগুলোই মূলত চিটা।
উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক ইয়াকুব আলী বলেন, শনির হাওরে উঁচু জমিগুলোতে কেয়ার প্রতি (৩০ শতক) ২ থেকে ৩ মণ ধান হতে পারে।
একই কথা জানালেন, হাওরের অপর কৃষক আবুল কালাম তিনি বলেন, শুধুমাত্র পানির অভাবে ধান গাছ গুলো মরে যাচ্ছে। মরে যাওয়া ধানগাছে কি বা ফলন আশা করা যায়।
তাছাড়া হাওরের নীচু জমি গুলোতেও চলতি বছর ৮ থেকে ১০ মনের বেশী ফলন হবে না কেয়ার প্রতি তাও জানান তিনি।
উপজেলার মাটিয়ান হাওরপার বড়দল গ্রামের কৃষক বশির আহমেদ তিনি জানান, তার প্রতি কেয়ার জমি রোপণ থেকে শুরু করে কাটা মড়াই পর্যন্ত ৫ থেকে ৫ হাজার ৫শ টাকা খরচ পড়বে। সে হিসেব প্রতি কেয়ার জমি থেকে তিনি ৮ মণ ধান পেলে উৎপাদন ব্যায় মিটাতে হিমশিম খাবেন।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এ সমস্যাটা দেখা দিয়েছে। আমি কিছু জমি দেখেছি ধান পাকতে শুরু করেছে কিন্তু ধানে ফলন একটু কম হয়েছে।