সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বই পাঠের মাধ্যমে মানুষের চিন্তা-চেতনা পরিশীলিত ও সুন্দর হয়। মানুষ সৌন্দর্যের পূজারী হয়। বইমেলার মাধ্যমে সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়। নতুন পাঠক সৃষ্টি হলেই বইমেলা সার্থক হয়। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এরই ধারাবাহিকতায় বইমেলা আয়োজন নতুন পাঠক সৃষ্টির মাধ্যমে জাতির মননকে উন্নত করে তুলতে অশেষ ভূমিকা রাখবে বলে বিশ^াস করি।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের ১৩ দিন ব্যাপী দ্বাদশ কেমুসাস বইমেলা-২০১৯-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল শনিবার বিকাল পাঁচটায় সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ফিতা কেটে ও শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর কেমুসাস প্রাঙ্গণে বইমেলা মঞ্চে সংসদের সহ সভাপতি ও বইমেলা উপকমিটির আহবায়ক এম এ করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বক্তব্য রাখেন। বইমেলা উপকমিটির সদস্য সচিব এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন ও সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মবনুর যৌথ সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংসদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা অংশ নেন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাবেক সহ সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম, দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার।
স্বাগত বক্তব্যে সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের চর্চা করে আসছে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য চর্চার অনুপ্রেরণা সৃষ্টির জন্যই ধারাবাহিতকভাবে মূলত বইমেলার আয়োজন করে সংসদ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদের সহ সভাপতি মুহম্মদ বশিরুদ্দিন, সেলিম আউয়াল, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ মুহিবুর রহমান, কার্যকরী পরিষদ সদস্য মাওলানা ফজলুল করিম আজাদ, অধ্যক্ষ মো. ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত, অধ্যক্ষ সৈয়দ মুহাদ্দিস আহমদ, জাহেদুর রহমান চৌধুরী, নাজমুল হক নাজু, সাহেদ হোসাইন প্রমুখ। এছাড়া উদ্বোধনী সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ লেখক-পাঠক এবং প্রকাশকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রধান অতিথি সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বইমেলা প্রতিটি স্টল পরিদর্শন করে ভূয়সী প্রশংসা করেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় বইমেলা কেমুসাসের সাবেক সভাপতি এডভোকেট মুসতাক আহমদ চৌধুরীকে নিবেদিত করা হয়েছে। দ্বাদশ কেমুসাস বইমেলা আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।
প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলার অনুষ্ঠানসূচীর মধ্যে রয়েছে: ২৪ মার্চ রবিবার বিকেল ৪টায় বিশেষ ‘ক’ ‘খ’ ও ‘গ’ গ্র“পের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও প্রকাশনা উৎসব; ২৫ মার্চ সোমবার বিকেল ৪টায় বিশেষ ‘ক’ ‘খ’ ও ‘গ’ গ্র“পের আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রকাশনা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ২৬ মার্চ, মঙ্গলবার সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ২৭ মার্চ, বুধবার বিকেল ৪টায় ‘ক’ ‘খ’ ও ‘গ’ গ্র“পের হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রকাশনা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ২৮মার্চ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় বিতর্ক প্রতিযোগিতার প্রথম ও দ্বিতীয় পর্ব (কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়),সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রকাশনা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ২৯ মার্চ শুক্রবার বিকেল ৪টায় বিতর্ক প্রতিযোগিতা (ফাইনাল পর্ব), সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রকাশনা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ৩০ মার্চ শনিবার বিকেল ৪টায় ক্বিরাত প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রকাশনা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ৩১ মার্চ, রবিবার বিকেল ৪টায় ‘ক’ ‘খ’ ও ‘গ’ গ্র“পের নির্ধারিত বক্তৃতা, সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রকাশনা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ১ এপ্রিল, সোমবার বিকেল ৪টায় লেখক আড্ডা ও মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে আলোচনা; সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রকাশনা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ২ এপ্রিল, মঙ্গলবার, কবি আল মাহমুদ স্মরণসভা, ৩ এপ্রিল, বুধবার স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর; সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রকাশনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; ৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠান, পুরস্কার ও সার্টিফিকেট বিতরণ। বিজ্ঞপ্তি