হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের হরিধরপুর গ্রামে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় আসামী নোমান মিয়ার কারাগারে মৃত্যুর ভুয়া সংবাদের জের ধরে দু’গ্র“পের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
জানা যায়, গত ১৩ মার্চ রাতে উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের হরিধরপুর গ্রামে প্রস্রাব করার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে জনৈক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনার ৪ দিন পর ১৭ মার্চ রবিবার কিশোরীর পিতা নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলে তাৎক্ষণিক নবীগঞ্জ থানা পুলিশ মামলার ২য় আসামী ওই গ্রামের সুফি মিয়ার পুত্র নবীগঞ্জ কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী নোমান মিয়া (১৮) কে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় ১৮ মার্চ সোমবার নোমান মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে বাউসা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার দীপ্তেন্দু দাস গুপ্তর কাছে অজ্ঞাত দুটি নাম্বার থেকে কল দিয়ে নবীগঞ্জ থানার অফিসার এবং জেল হাজতের জেল সুপার পরিচয় দিয়ে জানায়, আসামী নোমান জেল হাজতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে। নোমানকে সিলেট নেয়া হচ্ছে। তাকে বাঁচাতে হলে দ্রুত ৬০ হাজার টাকা বিকাশ নাম্বারে পাঠানোর জন্য বলা হয়। এ খবর আসামী নোমানের চাচা সালেহ আহমদকে অবগত করেন ইউপি সদস্য। এ খবর পাওয়ার পর সালেহ আহমদ দ্রুত ওই নাম্বারে বিকাশে দুই বারে ৩০ হাজার টাকা পাঠান এবং নোমানের পরিবার সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে নোমান মারা গেছে খবর পেলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে নুর ইসলাম গং ও সুফি মিয়া গংরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। প্রায় আধা ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ গোলাম দস্তগীরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। সংঘর্ষে আহতরা হলেন, ছাতির মিয়া (৪০), হাসিনা বেগম (৩৫) নুর ইসলাম (৩৫), সাকিরা আক্তার (৩০), আকলিয়া আক্তার (১৫)। অপর আহতদের তাৎক্ষণিক পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ গোলাম দস্তগীর জানান, ভুয়া খবরের জের ধরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।