নবীগঞ্জের নির্বাহী অফিসার ও সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার মামলা ॥ সম্মানী ভাতা স্থগিত রাখার অভিযোগ

45

ছনি চৌধুরী হবিগঞ্জ থেকে  :
ক্ষমতা অপব্যবহার করে সম্মানী ভাতা স্থগিত করার অভিযোগ এনে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদ বিন হাসান সহ দুইজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। সহকারী জজ মামলাটি দায়ের করেছেন ওই উপজেলার সাতাইহাল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন আহমেদ (বীর প্রতীক)। মামলার অপর বিবাদী হচ্ছেন নবীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর নূর। মঙ্গলবার দায়ের করা মামলার বিবরণে প্রকাশ, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কৃতিত্ব রাখায় নূর উদ্দিনকে বীর প্রতীক খেতাব দিয়েছে রাষ্ট্্র। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সমাজ সেবা অধিদপ্তর এবং বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত হওযায় তিনি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্ট থেকে নিয়মিত সম্মানী ভাতা পেয়ে আসছেন। অন্যান্য বারের ন্যায় গত বছরের ১৬ আগষ্ট উপজেলার ৩০৪ জন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতার তালিকা উপজেলা সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তার অফিস থেকে নবীগঞ্জ সোনালী ব্যাংকে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু তালিকায় ৬৭ নম্বরে বাদীর নাম উল্লেখ করে ‘‘পরবতী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ভাতা বন্ধ থাকবে’’ বলে মন্তব্য থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা তার ভাতা প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন। একইভাবে পরবর্তী সম্মানী ভাতার তালিকায় অনুরূপ মন্তব্য থাকায় মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন ভাতা ও ঈদ বোনাস থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এ ব্যাপারে বাদী নূর উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তারা একে অপরের উপর দায়ভার চাপিয়ে নিজেদের দায়মুক্ত করার চেষ্টা করেন। মামলায় বলা হয়, একজন মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার পাশাপশি তার ‘খেতাবী’ ভাতা পাবেন না মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় হতে জারীকৃত এ পর্যন্ত কোন পরিপত্রে তা উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা কোন শত্র“ পক্ষের অবৈধ প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। নূর উদ্দিন বীর প্রতীক এ পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকা বঞ্চিত রয়েছেন উল্লেখ করে তিনি মামলায় আর্জিতে আরো উল্লেখ করেন যে, তার সম খেতাবদারী দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা মুুক্তিযোদ্ধাগণ (নাম উল্লেখ করে) মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্ট ও সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে প্রদত্ত ভাতা গ্রহণ করছেন। এ ক্ষেত্রে বিবাদীগণের বৈষম্যমূলক ও ন্যায় নীতি পরিপন্থি আচরনের কারনে সম্মানী ভাতা ও ঈদ বোনাস থেকে তাকে বঞ্চিত রয়েছেন বলে বাদি মনে করেন।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসান এর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,২০১৬ সালের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে একজন মুক্তিযোদ্ধা একাধিক সম্মানী ভাতা গ্রহণ করতে পারবেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি তার ভাতা স্থগিত করেছে।