কৃষকের পক্ষে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে – বজলুল মজিদ চৌধুরী

70

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিনিধি সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু বলেছেন, এবারে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু থেকেই প্রশাসন লোকচুরির আশ্রয় নিয়েছে। যে কচ্ছব গতিতে কাজ চলছে বর্ষার আগে শেষ হওয়ার কোন লক্ষণ নেই। কিছু কিছু বাঁধে ২১ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু হয়েছে। গণ শুনানির মাধ্যমে পিআইসি গঠন হলে আজকে হাওর এ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তো না। আমাদের জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ যোগদান করার পরই আমরা উনার সাথে মতবিনিময় সভা করেছি, আমাদের দাবি ছিলো গণশুনানির মাধ্যমে পিআইসি করতে হবে উনি আমাদের কথা রাখলেন না। উনাদের খেয়াল খুশি মতো পিআইসি গঠন করলেন, ২০১৭ সালের দুর্নীতির মামলার আসামীদের সভাপতি করলের আমরা আন্দোলন শুরু করলাম। আন্দোলনের মুখে দুর্নীতির মামলার আসামীদের বাদ দিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত হাওর রক্ষা বাঁধের কাজের যে অগ্রগতি তা ৪০-৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না। এখন খুরা যুক্তি দাঁড় করানো হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের জন্য বাঁধের কাজ শুরু করতে দেড়ী হয়েছে। আমরা জেলার সকল উপজেলার রিপোর্ট কম্পাইল কওে চলতি সপ্তাহে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারক লিপি দেবো। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ না হলে কৃষকের পক্ষে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বাঁধের অসঙ্গতি তুলে ধরে আমরা আদালতের আশ্রয় নেব। আমাদের লিগ্যাল এইস সেকশন সে কাজ শুরু করেছে। প্রত্যেক উপজেলায় তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা আর ২০১৭ সালে ফিরে যেতে চাই না।
শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটায় শহরের লতিফা কনফারেন্স হলে সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরুর সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক বিজন রায় ও যুগ্ম সম্পাদক সালেহিন চৌধুরী শুভর যৌথ পরিচালানয় অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা নারী নেত্রী শীলা রায়, মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, বিকাশ রঞ্জন চৌধুরী ভানু, রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা সভাপতি জালাল উদ্দিন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মালেক হোসেন পীর, এডভোকেট স্বপন কুমার দাস, সুখেন্দু সেন, ইয়াকুব বখত, মো. রবিউল ইসলাম, ডা. মুর্শেদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক একে কুদরত পাশা, ইমরানুল হক চৌধুরী, প্রদীপ কুমার পাল, রাধিকা রঞ্জন তালুকদার, আসু সাইদ, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
বিভিন্ন উপজেলার রিপোর্ট উপস্থাপন করেন, দিরাই উপজেলা সদস্য সচিব, শামসুল ইসলাম সরদার খেজুর, তাহিরপুর উপজেলা সদস্য সচিব গোলাম সারোয়ার লিটন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, জামালগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন পুরকায়স্থ, ছাতক উপজেলা সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর চৌীধুরী, ধর্মপাশা উপজেলা সদস্য সচিব চয়ন কান্তি, সদর উপজেলার প্রভাষক দুলাল মিয়া।
সভায় বক্তারা বাঁধের কাজের অগ্রগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাঁধের কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মখর্তারা তাদের খেয়াল খুশি মতো অগ্রগতি রিপোর্ট তৈরী করছেন যা বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই। আমরা মনে করি অগ্রগতি রিপোর্ট তৈরীর সময় হাওরের কৃষক এবং হাওর নিয়ে যারা কাজ করে তাদের যৌথ উপস্থিতিতে করা প্রয়োজন। বাস্তবে এখন পর্যন্ত ৪৫-৫০ শতাংশ মাটির কাজ শেষ হয়েছে। কোন বাঁধেই কম্পেকশন করা বা দুর্বাঘাস লাগানো হচ্ছে না। বাঁধের কাছ থেকে মাটি তোলে পুরাতন বাঁধের উপর কিছু মাটি ভরাট করা হচ্ছে যা সামান্য বৃষ্টিতেই ধসে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের কাজ শেষ করা হয়নি। বৃষ্টি হলেই হাওর তলিয়ে যেতে পারে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। তারা অবিলম্বে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী বাঁধের কাজ শেষ করে কৃষকদের বাঁধ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য দাবি করন। নতুবা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে আহ্বান জানান।