জাহাঙ্গীর আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
এক মাস ৩দিন আগে গত ১০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বনাথ উপজেলার বৈরাগী বাজার থেকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করেন মাদক স¤্রাট সুহেল আহমদকে (৩০)। গ্রেফতারের পর গাড়িতে তোলার আগেই পুলিশকে পিটিয়ে আহত করে পুলিশের জ্যাকেটসহ সুহেলকে ছিনিয়ে নেয় তার সহযোগীরা। ওইদিন রাতে সুহেলকে প্রধান আসামিসহ আরও ৩০জনকে অভিযুক্ত করে থানায় পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা দায়ের করেন আহত হওয়া এসআই সবুজ কুমার নাইডু, (মামলা নং ১০)। ঘটনার পরদিন শুক্রবার ভোরে রহমান নগরের কয়ছর আহমদ (৩০) ও তার ভাই জাকির আহমদকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়। এরই মধ্যে এ দু’জনকে রিমান্ডেও আনা হয়েছে। অথচ, ঘটনার দীর্ঘ এক মাসেও নওধার গ্রামের করিম বক্সের ছেলে মাদক সম্রাট ওই সোর্স সুহেলকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, সুহেলের অবস্থান জানা থাকলেও নিজেদের সোর্স হওয়ায় সুহেলকে ধরছে না পুলিশ।
তবে, বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেবাশীষ শর্ম্মার কন্ঠে ভিন্ন সুর। এ প্রসঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন আগে সোর্স ছিল এখন নয়। আর তাছাড়া সুহেলসহ মামলার অন্য আসামিরাও এলাকা ছাড়া। তাই সুহেলসহ অভিযুক্তদের কাউকেই গ্রেফতার করা যাচ্ছেনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে পুলিশের সোর্সের কাজ করছে সুহেল। আর এ কারণেই ধীরে ধীরে গ্রামের ছাবাল শাহ্’র মাজারের ওরসকে ঘিরে শুরু হয় তার রমরমা মাদক ব্যবসা। পুলিশের সঙ্গে ভাল সখ্যতা থাকায় মদের পাশাপাশি নারী ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ে সুহেল। ফলে অল্প দিনেই এলাকায় বেশ আধিপত্য বিস্তার করে সে। প্রতি বৃহস্পতিবার মাজারে ওরসের নামে চালে মাদক আর অসামাজিক কর্মকান্ড। এহেনও কর্মকান্ড থেকে রেহাই পেতে ২০১৮ সালের ৩ জুলাই সুহেলসহ তার সাঙ্গপাঙ্গকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলা করেন ছাবাল শাহ্’র কলেজে পড়–য়া মেয়ে তাছলিমা বেগম (সিআর নং ২১৩/১৮)। এর ১২দিন পর ১৯ জুলাই একইভাবে বিশ্বনাথ থানায় আরেকটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন তাছলিমা। সোর্সকে রক্ষার্থে তদন্তের নামে থানা পুলিশ মামলাটি রুজু না করে দীর্ঘ ৫ মাস ২০ দিন আটকে রাখেন। পরে নিরুপায় হয়ে তাসলিমা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট আবেদন করেন। পরে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি বিকেলে মামলা রুজু করা হয় (মামলা নং ৯)। আর ওইদিন রাতে সুহেলকে গ্রেফতার করতে গিয়ে মার খেয়ে ফিরতে হয় তাদের।