প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সন্তানদের বেসরকারি কিন্ডার গার্টেনে পড়াতে পারবেন না

77

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তুলনায় বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এই শিক্ষা ব্যবস্থায় রাশ টানার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রাথমিকের শিক্ষকরা তাদের সন্তানদেরকে পাঠাতে পারবেন না ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেছেন, এতে প্রাথমিকে শিক্ষার মান বাড়াতে শিক্ষকরা উদ্যোগী হবেন। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রিসভার নতুন মুখদের একজন।
জার্মান শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক ফ্রো এব্ল এর উদ্যোগে কিন্ডারগার্টের স্কুল প্রথম চালু হয় জার্মানিতে। বাংলাদেশে এই শিক্ষা ব্যবস্থা জনপ্রিয় হতে শুরু করে ৯০ দশক থেকে। আর চলতি শতকে শহরাঞ্চলে শিশুদের একটি বড় অংশ সরকারি প্রাথমিকের বদলে কিন্ডারগার্টেনকেই বেছে নিচ্ছে।
বর্তমানে দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজারের মতো। আর কিন্ডারগার্টেনের সংখ্যা অন্তত ৭০ হাজার বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদের সভাপতি এম ইকবাল বাহার চৌধুরী। তিনি জানান, প্রতি বছরই স্কুলের সংখ্যা বাড়ছে এবং এই মুহূর্তে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২ লাখের বেশি।
কিন্ডারগার্টেন এখন ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলা শহর, এমনকি গ্রামাঞ্চলেও। আর এতে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষার যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য সেটি পূরণ হচ্ছে না।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকে পড়া শিশুরা কেজি স্কুলের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমরা প্রাথমিক শিক্ষার মান এমনভাবে উন্নত করতে চাই যাতে করে কেজি স্কুল থেকে শিশুরা প্রাইমারি স্কুলে আসতে শুরু করে।’
কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের বেতন খুবই কম দেওয়া হয় উল্লেখ করে জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি, কিন্তু শিক্ষার মান কম। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর এবং অবসরে যাবার দুই মাসের মধ্যে শিক্ষকদের পেনশনের টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। প্রতিটি স্কুলের পাঠদানের সূচি একই রকম করা, প্রতিটি স্কুলে স্কাউট ও গার্ল গাইড গঠনের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
শিক্ষকদের প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হারাম খাব না। বেতন নেব অথচ শ্রম দেব না তা হয় না। প্রত্যেক শিক্ষককে সকাল নয় টায় স্কুলে আসতে হবে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে হবে। শিক্ষার মান সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব সকলের। আমরা একই পরিবারের সদস্য।’