কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি বাঙালি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন। বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিন বাঙালিরা বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। চলছে শীতকাল। শীতের পাশাপাশি শৈতপ্রবাহ বিরাজমান। পৌষ মাস শেষে মাঘ মাসের আগমন ঘটবে। সনাতন ধর্মালম্বীদের চিরাচরিত প্রথা অনুয়ায়ী পৌষ সংক্রান্তি বর্ণিত আয়োজনে উদযাপন করা হয়।
প্রতিমাসের শেষ দিন অর্থাৎ যে দিন মাস পূর্ণ হবে সে দিনকে সংক্রান্তি বলা হয়। এভাবে বারোটি মাসে বারোটি সংক্রান্তি মধ্যে বিশেষ ভাবে পৌষমাসের সংক্রান্তি উল্লেখ্যযোগ্য এবং তাৎপর্যপূর্ণ। সংক্রান্তি অর্থ সঞ্চার বা গমন করা। সূর্যাদির এক রাশি হতে অন্য রাশিতে সঞ্চার বা গমন করাকেও সংক্রান্তি বলা যায়। সংক্রান্তি শব্দটি বিশ্লেষণ করলেও একই অর্থ পাওয়া যায়; সংক্রান্তি, সং অর্থ সঙ সাজা এবং ক্রান্তি অর্থ সংক্রমণ। অর্থাৎ ভিন্ন রূপে সেজে অন্যত্র সংক্রমিত হওয়া বা নুতন সাজে, নুতন রূপে অন্যত্র সঞ্চার হওয়া বা গমন করাকে বুঝায়।
সংক্রান্তির কয়েকদিন আগ থেকে গ্রামের মহিলারা ঢেঁকিতে চাল ভেঙ্গে পিঠা করার জন্য গুড়ি তৈরি করছেন। সোমবার (১৪ জানুয়ারি) পৌষ সংক্রান্তির আগের দিন সকালে বিশেষ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরার মাঝে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করে। দুপুরে খড়, বাঁশ, বেত দিয়ে মানুষের আকৃতির ভেড়াভেড়ি নামক এক পুত্তলিকা তৈরি করে। সারা রাত জেগে মহিলারা নানা ধরনের পিঠা ফুলি পায়েশ ইত্যাদি তৈরি করেন। পরদিন ভোরে (সংক্রান্তির দিন) আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলই ¯œান করে শিশু কিশোররা নতুন জামা কাপড় পরিধান করে ভেড়াভেড়া পুত্তলিকা আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে আনন্দ উল্লাস করে। সারাদিন চলে বাড়ীতে বাড়ীতে পিঠা পুলি খাওয়ার ধুম। সকাল থেকেই গ্রামের সবাই সম্মলিতভাবে নানা বাধ্যযন্ত্র বাজিয়ে প্রতিটি মন্দির, দেবস্থলি, গৃহে গৃহে নাম সংকীর্ত্তন করেন। এ সময় তিলুয়া-বাতেসা, নকুলদানা, কমলাসহ নানা ধরনের ফল কীর্ত্তণের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া হয়। মাঘ মাসর প্রথম দিন আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশীকে একে অন্যে নিমন্ত্রণ করে আপ্যায়িত করা হয়।