কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে নবগঠিত ৪৭ সদস্যের মন্ত্রী সভায় ঠাঁই হয়নি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও ১৪ দলের শরিকদের। এ নিয়ে এরই মধ্যে দুই জোটের অনেকেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রী সভায় কেন জোটের শরিকদের জায়গা হলো না- এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন জোট নেতাদের অনেকে।
তবে মন্ত্রী হতে না পারার হতাশার মাঝেও আশা ছাড়েননি তাদের অনেকে। এ বিষয়ে এখনো আলোচনার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন তারা।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পাওয়ার পরে সোমবার বঙ্গভবনে শপথ নেন নবগঠিত মন্ত্রিসভার সদস্যরা। মহাজোট ও ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে গত সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন (ওয়ার্কার্স পার্টি), তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু (জাসদ) ও পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (জেপি) বাদ পড়েছেন এবারের মন্ত্রী সভা থেকে। পাশাপাশি মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির মশিউর রহমান রাঙ্গা, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক চুন্নুর নামও নেই ৪৭ জন মন্ত্রীর তালিকায়। বিগত সরকারের এ মন্ত্রীদের কাউকেই সোমবার মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।
সংসদে কার্যকর বিরোধীদল হতে মন্ত্রী সভায় জাতীয় পার্টির কেউ থাকবেন না-এরশাদের এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আগেই বোঝা গিয়েছিল, মন্ত্রী সভায় এবার দলটির কাউকে দেখা যাবে না। যে কারণে বঙ্গভবন থেকে ফোন পাওয়ার প্রত্যাশা করেননি জাপার কেউ। মন্ত্রী হওয়ার বাসনা অঙ্কুরে বিনাশ হলেও এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে দলটির নেতাদের মনে। এ নিয়ে মন্ত্রী হতে ইচ্ছুক দলের নেতারা দুষছেন এরশাদকে।
নাম প্রকাশ না করে তারা বলেছেন, দলের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের কারণেই মন্ত্রী হওয়া হয়নি তাদের। এ হতাশা থেকেই শপথ অনুষ্ঠানের চিঠি পাওয়ার পরেও বঙ্গভবনে ইচ্ছে করেই যাননি তারা।
দলের মহাসচিব ও গত সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি শপথ অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। অন্যরা কেউ গেছেন কি না বলতে পারব না।’
তবে ১৪ দলের শরিকদেরও প্রত্যাশা ছিল, বরাবরের মতো এবারও তারা মন্ত্রিসভায় থাকবেন। শেষ পর্যন্ত তাদের আশায়ও গুড়েবালি হয়েছে। এ ঘটনাকে অনাকাক্সিক্ষত বলেও মনে করেছেন তারা। তবে এখনো মন্ত্রিসভায় থাকার আশা ছাড়েননি তারা।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমরা মনে করি, মন্ত্রিসভায় রাখা উচিত ছিল। কেন সেটা করা হয়নি তা আমার জানা নেই।’ নির্বাচনের আগে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার কথা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব। এখনো সময় আছে। দেখি প্রধানমন্ত্রী কী করেন।’
এ বিষয়ে এখনো আলোচনার সুযোগ আছে সে ইঙ্গিত মিলেছে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যেও। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী না হলে শরিকরা আমাদের সঙ্গে থাকবেন না, বিষয়টা এমন নয়। সময় ও চাহিদা অনুযায়ী মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনও হতে পারে। শরিকরা এখন মন্ত্রিসভায় নেই বলে ভবিষ্যতে থাকবেন না এমন নয়।’