স্টাফ রিপোর্টার :
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন টিলায় আবারও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকালে গর্ত ধসে ২ শ্রমিক নিহত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল ৩ টার দিকে চিকাডহর গ্রামের রহিম গংদের গর্তে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাথর উত্তোলনকালে হঠাৎ গর্ত ধসার এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হচ্ছে- দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার আনুয়ার হোসেনের পুত্র সোনা মিয়া (২৫) ও ওয়াজিদ আলির পুত্র নুরুল হক (৩০)।
এদিকে, গতকাল সোমবার বিকেল ৩ টার দিকে একই উপজেলার ভোলাগঞ্জে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানকালে টাস্কফোর্স সদস্যদের উপর হামলা চালিয়েছে পাথর ব্যবসায়ীরা। এতে বিজিবি সদস্যসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। হামলায় গুরুতর আহত ২ জনকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, সিলেটের বিভিন্ন কোয়ারীতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন। আদালত ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণায়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছে। টিলা ও নদীতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে গর্ত খুড়ে পাথর উত্তোলন করা হয়। ফলে প্রায়ই গর্ত ধসে মারা যায় শ্রমিক। গত একবছরে সিলেটের বিভিন্ন কোয়ারিতে গর্ত ধসে মারা গেছেন ৫৪ শ্রমিক। এরমধ্যে শাহ আরেফিন টিলা ধসে মারা যান অন্তত ২০ জন। সর্বশেষ সোমবার আরো ২ জন মারা যান।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল লাইছ বলেন, টিলা ধসে ২ জনের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, লাশ গর্তের পানির নিচে পড়ে আছে বলে স্থানীয়রা বলেছে। সকালের আগে লাশ অনুসন্ধান সম্ভব নয়।
সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে অবৈধ পাথর উত্তোলকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে টাক্সফোর্স। এ সময় টাস্কফোর্সের উপর হামলা চালায় পাথর ব্যবসায়ীরা।
ইউএনও মোহাম্মদ আবুল লাইছ বলেন, ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে সোমবার বেলা ১টা থেকে টাস্কফোর্সের অভিযান শুরু হয়। অভিযানের শেষপর্যায়ে পাথর খেকোদের সংঘবদ্ধ একটি চক্র টাস্কফোর্সের ওপর হামলা চালায়। এতে টাস্কফোর্সের ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে বিজিবি সদস্য, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং আমাদের কর্মচারীরা রয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িত, তারাই এ হামলা চালিয়েছে। আমরা হামলাকারীদের পরিচয় সংগ্রহের চেষ্টা করছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো জানান, কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ কোয়ারি ও শাহ আরেফিন টিলা কেটে দীর্ঘদিন থেকেই অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছে একটি গোষ্ঠি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার অভিযান চালালেও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ পাথর উত্তোলন।