কাজিরবাজার ডেস্ক :
পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে একজন কমিশনারের পৃথক বার্তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম।
বুধবার নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, এডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, এডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার ও ড. সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।
বৈঠক শেষ ইসির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এইচ টি ইমাম বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর প্রতিপক্ষের হামলা ও আক্রমণের অভিযোগ জানাতে তারা ইসিতে এসেছিলেন।
তবে এর আগে সকালে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ বাহিনীর পোশাকের মর্যাদা রক্ষা করে কাজ করার আহবান জানান। একই সঙ্গে তিনি পুলিশ বাহিনীর কাজে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার ওপরেও গুরুত্বারোপ করেন।
কমিশনার মাহবুব তালুকদারের এই অবস্থানের সমালোচনা করে এইচ টি ইমাম বলেন, নির্বাচন কমিশন মানে চিফ ইলেকশনারসহ চার কমিশনার। সকলে মিলে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে যা বিবেচনা করবেন তা বলবেন। কোনও বিশেষ একজন কমিশনার ভিন্নভাবে কোনও নির্দেশ দিতে পারেন না এবং তা উচিতও নয়। এটি মানুষের মনে দ্বিধা সৃষ্টি করে অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন কমিশনারের মন্তব্য দেখে আমরা হতচকিত হয়ে গেছি। এরকম তো হওয়ার কথা নয়। কমিশনে যা কিছু বলবেন কমিশনের নামে তা প্রচার হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে কমিশন। নির্দেশ দিবে কমিশন। সেক্ষেত্রে কমিশনের পক্ষে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হলে তিনি বলতে পারেন। কিন্তু কমিশন থেকে বের হয়ে একজন ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশ দিবেন এটি গ্রহণযোগ্য নয়। যে কোনও প্রতিষ্ঠানে চেইন অব কামন্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একেক জন কমান্ডার একেক ধরণের কমান্ড দেন তাহলে সবাই বিভ্রান্ত হবেন।
এইচ টি ইমাম আরো বলেন, সরকারি দল হিসেবে আমরা অনেক কিছুই বলতে পারি। অনেকের কাছে আমরা নির্দেশও দিতে পারি। কিন্তু তা না করে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে বারবার আসি এজন্য যে অন্যেরাও এটা করে। কারণ সকলে মনে করে কমিশনের কাছে বিচার পাব। আমাদের কাছে কমিশন হচ্ছে ভরসাস্থল। এ বিষয়টি অন্যান্যরা পালন করেন না। নির্বাচন কমিশনকে শুধু হেয় নয়, কমিশনের সামনে এমনভাবে কথা বলেন, যেগুলো আচরণবিধির মধ্যে পড়ে না। নির্বাচন কমিশনকে কেউ কেউ টেবিল চাপড়ে কথা বলেন বা কেউ অশোভন উক্তি করেন এতে আমরাও ছোট হয়ে যাই। কমিশনকে আমরা এবিষয়টিও জানিয়েছি।
এছাড়াও সিইসির সঙ্গে বৈঠকে তারা যান চলাচলে বিধিনিষেধ শিথিল। সাংবাদিকদের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহারে অনুমতি, প্রার্থী ও দলের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জন্য যান চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন বলে জানান এইচ টি ইমাম।
তিনি বলেন, অর্থের অনেক চালানের মধ্যে একটি ধরা পড়েছে। কালো টাকার প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। নির্বাচনের দিন, অনলাইন মানি ট্রান্সফার বা মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ করার বিষয়ে কমিশনের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি এনজিওর বিষয়ে তাদের অবজারভেশন তুলে ধরা হয়েছে।