অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে নিজের ছোট ভাই ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, মোমেন যদি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তাহলে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশ-বিদেশে সংযুক্ত থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবেন।
তিনি বুধবার সিলেট সদর উপজেলার বটেশ্বর ও পীরের বাজার এলাকায় গণসংযোগ এবং হাটখোলা ইউনিয়নের শিবের বাজারে নৌকার সমর্থনে পথসভায় এ আহ্বান জানান।
এদিকে, বিকেলে শিবেরবাজারে একই সভায় সাবেক প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান, সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া ইনাম আহমদ চৌধুরী বলেছেন, সিলেটে যারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সেখানে ড. মোমেনের জুড়ি আর কেউ নেই। তিনি (মোমেন) তার মেধা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সিলেটসহ বাংলাদেশকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, মোমেন আমার ছোট ভাই। তিনি আওয়ামী লীগেরই লোক। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করছেন। জাতিসংঘে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ছয়টি বছর কাজ করেছেন, দেশটাকে অগ্রণী দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি বলেন, বহুদিন পরে আমি আপনাদের সামনে এসেছি। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে যেসব ওয়াদা করেছিলাম সেগুলো পালন করার চেষ্টা করেছি। আজ বলতে পারি, সেসব ওয়াদা খুব একটা অসম্পূর্ণ থাকে নাই।
অর্থমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা উন্নয়নের যে জোয়ার শুরু করেছেন, সেখানে আমি একটা ভূমিকা রেখেছি। আমরা চাই এই জোয়ার অব্যাহত থাকুক। আরো পাঁচটি বছর আমরা যদি উন্নয়নের জোয়ার অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে এই দেশে দারিদ্র্য মোটেই থাকবে না।
অচিরেই বাংলাদেশ উন্নত জাতি হিসেবে পৃথিবীতে অবস্থান তৈরি করবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এখন বিশ্বে উৎকৃষ্ট স্থানে আছি। আমাদের নেতৃত্ব এখন বিশ্বের একদম শীর্ষ নেতৃত্ব। এই নেতৃত্ব ধরে রাখতে হবে, সময়ের সদ্যবহার করতে হবে। তাই, এই মুহূর্তে দরকার শেখ হাসিনা সরকার।
এর আগে সকালে খাদিমপাড়া ইউনিয়নের বটেশ্বরে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির কোনো আদর্শ নেই। দলটি রাষ্ট্র পরিচালনা করতে জানে না। অতীতে রাষ্ট্র ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে দুর্নাম কুঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখনো তাদের নেতা। তিনি দেশ পরিচালনার জন্য অনুপযুক্ত। তাই এ নির্বাচনে বিএনপির কোন চান্স নেই।
নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। দুই-একটি স্থানে বিএনপির ওপর হামলা হয়ে থাকতে পারে। তবে বিএনপিও আওয়ামী লীগের ওপর প্রকাশ্যে এবং চোরাগোপ্তা হামলা করেছে। গণসংযোগকালে অর্থমন্ত্রী স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সর্বস্তরের ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে ড. মোমেনকে বিজয়ী করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
সিলেটে ড. মোমেনের কয়েকটি নির্বাচনী অফিসও ভাঙচুর, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ও কর্মীদের মারধরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি’র এই সংস্কৃতি দীর্ঘদিনের। তারা অতীতে পেট্রোল বোমা মেরে, মানুষ হত্যা করে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। এবারও তাদের উদ্দেশ্য ভাল নয়।
বিকেলে শিবেরবাজারে পথসভায় ইনাম আহমদ চৌধুরী আরও বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে চাই কি-না। যদি উন্নয়ন অগ্রযাত্রার পথ সুগম করতে চাই, তবে নৌকায় ভোট দিতে হবে।
ইনাম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সিলেটকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন, সিলেট যেভাবে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে সেটা অন্য কোথাও নেই। আমার বিশ্বাস, আগামী দিনে যেভাবে উন্নয়নের জোয়ার আসছে, সেখানে সিলেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাবে।
তিনি ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা এগিয়ে আসুন, নৌকায় ভোট দিন, ড. মোমেনকে জয়যুক্ত করুন। আমার বিশ্বাস সিলেট উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কোন দ্বিধা থাকার কথা নয়, আমরা সবাই একবাক্যে বলবো, মোমেনকে ভোট দিই, তাকে জয়যুক্ত করি। শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রায় শামিল হই।
এছাড়াও বুধবার দুপুরে সিলেট নগরীর লালদিঘীরপাড়, হাকার্স মার্কেট এলাকায় গণসংযোগ, নগরীর কালিঘাটে নির্বাচনী সভা, পরে চৌকিদেখী এলাকায় ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সভা, রাত ৮টায় মদিনা মার্কেটে ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভা, রাত ৯টায় খাদিমপাড়া ইউনিয়নের মুরাদপুর বাজারে নির্বাচনী সভা করেন ড. মোমেন।
এসব অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, সহসভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পুরকায়স্ত, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ দাস, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, মখলিছুর রহমান কামরান, ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াছ, ডা. আরমান আহমদ শিপলু, এডভোকেট শামসুল ইসলাম, এডভোকেট রনজিত সরকার, এডভোকেট নূরে আলম সিরাজী, মাসুম বিল্লাহ চৌধুরী এডভোকেট, এডভোকেট সৈয়দ শামীম আহমদ, জাহিদ সরওয়ার সবুজ, এডভোকেট মোস্তফা দেলওয়ার আল আজহার, এসএম নুনু মিয়া, সেলিম আহমদ সেলিম, সিদ্দেক আলী, মির্জা জামাল পাশা, কামাল আহমদ, বিধান কাপালী, সুজেল আহমদ, আব্দুল লতিফ রিপন, আব্দুর রহমান, শাফায়াত খান, ইমরান আহমদ, শহীদ আতিব অপু, মিফতাহুল হোসেন লিমন, ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, এডভোকেট আফছর আহমদ, সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বিলাল, আব্দুল হক, মোশাহিদ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আমির উদ্দিন আহমদ, সুদীপ দে, নজরুল ইসলাম নজু, ফজলুর রহমান খান, মকবুল হোসেন খান, মনিরুজ্জামান সেলিম, ইসলাম উদ্দিন, নান্টু চন্দ্র, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম, মহানগর যুবলীগ নেতা সাইফুর রহমান খোকন, আসাদ উদ্দিন, আনসার মিয়া মহালদার, আব্দুর রহমান, কামরান আহমদ, ফারুক হোসেন হায়দার, আব্দুল হামিদ নূরানী, জাহিদুল হোসেন মাসুদ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি