কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপি-জামায়াত পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সহায়তায় জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে বড় ধরনের সহিংসতা করার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির অভিযোগ, জাতীয় নির্বাচনে যাতে প্রাণহানি হয় এবং নির্বাচন ভন্ডুল হয় সেই ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি-জামায়াত। আর গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এ ষড়যন্ত্রের পেছনে কাজ করছে। তবে দেশের জনগণই তাদের (বিএনপি) এ ষড়যন্ত্রকে বানচাল করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে।
মঙ্গলবার ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান এমপি। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সাবেক ডাকসু ভিপি আকতারুজ্জামানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আবদুর রহমান বলেন, সারাদেশে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। সুন্দর পরিবেশে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন হবে বলে তাকিয়ে আছে দেশের মানুষ। মানুষ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দশ বছরে দেশের যে অসাধারণ উন্নয়ন হয়েছে, সে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য দেশের মানুষ আবারও তাঁকে নির্বাচিত করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, জাতির মধ্যে ভয়ঙ্কর আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ততই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নির্বাচনকে ভন্ডুল করার পাঁয়তারা চলছে। বিএনপি-জামায়াতের নেতারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় এমপি প্রার্থী ডাঃ দীপু মনির বাসায় হামলা চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির জনসমর্থন নীরবে সরে গেছে। জনগণ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা বিএনপির বস্তাপচা প্রতিশ্রুতিতে সাড়া দিচ্ছে না। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণ শেখ হাসিনার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা বুঝতে পেরেছে তারা জনসমর্থন হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয় থেকেই সন্ত্রাস ও নাশকতার পথ বেছে নেয়ার পরিকল্পনা করেছে।
আবদুর রহমানের অভিযোগ, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি-জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং দেশমাতৃকা রক্ষার শেষ আশ্রয়স্থল দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনীকে নিয়েও ষড়যন্ত্র করছে। তাদের মিথ্যাচারের ভয়াবহতা এতই প্রকট হয়ে উঠেছে যে, তাদের মনগড়া, বিকৃত, বাস্তবতা বিবর্জিত অপপ্রচার রাজনীতির ময়দান ছেড়ে আমাদের জাতিগত গর্ব ও আত্মমর্যাদার স্মারক জাতীয় সেনাবাহিনী পর্যন্ত গড়িয়েছে। তারা (বিএনপি-জামায়াত) আইএসআইয়ের প্রেসক্রিপশনে আমাদের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) সেনাবাহিনীর নামে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
বিবেকের আয়নার সামনে দাঁড়ালে ড. কামাল হোসেন নিজের পাশে ইয়াহিয়া খানকে দেখতে পারবেন এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতা পাকিস্তানপ্রেমী ড. কামাল হোসেন তাঁর সংবাদ সম্মেলনে একাত্তরের গণহত্যাকারী ইয়াহিয়া খানের নাম উচ্চারণ করেছেন। বিবেকের আয়নার সামনে দাঁড়ালে ইয়াহিয়ার পাশে নিজেকে দেখতে পাবেন তিনি। ড. কামাল হোসেন এখন পাকিস্তানী ভাবধারার অনুসারীদের অভিভাবক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী মেজর খালেদ মোশাররফ, কর্নেল তাহের, শাফায়েত জামিলসহ শত শত সেনা কর্মকর্তার হত্যাকারী, ২১ আগস্টের হামলাকারী, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ও তাদের পরিবারের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন ড. কামাল হোসেন।
আবদুর রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাস ও নাশকতা করে তার দায় আওয়ামী লীগের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। আর বিএনপির মধ্যে যে অভ্যন্তরীণ সংঘাত হচ্ছে তা তাদের মনোনয়ন বাণিজ্যের ফসল। বিএনপি-জামায়াত পরাজয়ের আশঙ্কা থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে বড় ধরনের নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে। জনগণকে ভোটের মাধ্যমে এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জবাব দিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনী নির্বাচন কমিশন (ইসি)’র নির্দেশে চলে। ড. কামাল হোসেনরা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।