স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট-৩ আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মাহমুদ উদ সামাদ কয়েসের নির্বাচনী কার্যালয়ের পাশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বোমার শব্দে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে কে বা কারা মাহমুদ উস সামাদ কয়েসের মোগলাবাজার ইউনিয়নের দাউদপুরের চৌধুরীবাজারস্থ নির্বাচনী কার্যালয়ে কে বা কারা বোমা ছুড়ে মারে। বোমাটি লক্ষ্যচ্যুত হয়ে নির্বাচনী কার্যালয়ে না পড়ে কার্যালয়ের পাশে পড়ে বিস্ফোরিত হয়। ঐ সময় নির্বাচনী কার্যালয়ে বসা দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আহমদ হোসেন খোকন (৫০) বোমার শব্দে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মাটিতে ঢলে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দক্ষিণ সুরমার নর্থইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই আব্দুল কাইয়ুম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে বোমার আলামত উদ্ধার করে। ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় আওয়ামীলীগ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে।
এদিকে গতকাল রাত ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে নগরীর চৌকিদেখীতে সিলেট-১ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ড. এ কে আবদুল মোমেনের নির্বাচনী কার্যালয়ে দুই মোটরসাইকেলে ৪/৫ জনের একটি গ্র“প এসে দুটি ককটেল ছুড়ে মারে। ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে আশেপাশে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী সহ পুলিশের একটি ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
অপর দিকে নগরীর শাহপরানে শনিবার গভীর রাতে ড. মোমেনের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রতিবাদে রাতেই সড়ক অবরোধ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে শাহপরান থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার গভীর রাত পৌণে ২টার দিকে শাহপরান গেইটস্থ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে এ হামলা-ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা অফিসের চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে রাস্তায় ফেলে রাখে। অফিসে অগ্নিসংযোগসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে হামলার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে শত শত ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করেন। তারা রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। পরে রাত সোয়া ৩ টায় শাহপরান থানা পুলিশের অনুরোধে রাস্তা অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে।
হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেইন। এছাড়াও ঘটনাস্থলে উপস্তিত ছিলেন খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আফসর আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল ইসলামসহ যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।
এস এম জাকির হোসেইন নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা রাতের আধারে হামলা করে তারা কাপুরুষ। রাতের আধারে হামলা করাই জামাত-বিএনপির কাজ। এখন থেকে তাদের কাজের দাত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয় নাই। তদন্ত করে এ ব্যপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, গতকাল রবিবার সিলেট-১ আসনের মহাজোটের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এ.কে. আব্দুল মোমেনের খাদিমপাড়া ইউনিয়নের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে খাদিমপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে খাদিপাড়া এলাকায় এক মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। খাদিমপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এডভোকেট আফছার আহমদের সভাপতিত্বে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর যুবলীগের সিনিয়র সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মখলিছুর রহমান চৌধুরী, মুশাহিদ আহমেদ চৌধুরী মাছুম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাশ মিঠু, আনছার মিয়া মহালদার, এম জামান চৌধুরী তসলিম, শেখ বদরুল, সামাদ আহমেদ, আফজল, ফখরুল ইসলাম দুলু, কবির, এম এ হান্নান, সাহেদ আহমেদ, বাবুল আহমেদ, সাইফুল আলম সিদ্দিকি, সাহেদ আহমেদ আনা, ওয়ালিউল্লাহ বদরুল, কামরুল ইসলাম, সোহেল আহমেদ, কাইয়ুম চৌধুরী প্রমুখ।