জেড এম শামসুল :
আজ ১৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এইদিনে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী খন্ড খন্ড স্থান বিজয়ের মধ্য দিয়ে হানাদার বাহিনীর সামরিক ঘাঁটি সমূহ ধ্বংস করে বৃহত্তর শহরগুলোর দিকে এগুতে থাকে। এদিন অন্যান্য দিনের চেয়ে মিত্র বাহিনী বিমান হামলা বাড়িয়ে দেয়। এদিন সিলেটে হানাদার বাহিনীর পাল্টা বিমান হামলাকে উপেক্ষা করে শহরতলীর পূর্বে খাদিমনগর ও দক্ষিণে জালালপুরে এবং পশ্চিমে লামাকাজি পর্যন্ত অবস্থান করে। ফলে হানাদার বাহিনীর পালানোর কোন উপায় নেই দেখে সালুটিকরের বিমানবন্দরে জড়ো হতে থাকে। এদিন সিলেট শহরতলীর চারিদিকে মুক্তিবাহিনী মাইকযোগে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায়। এদিন মুক্তিবাহিনী শহরতলীর আলুরতল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। ফলে হানাদার বাহিনী চরম হতাশ আর ভয়ভীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অব্যাহত বিজয়ে মনোবল বেড়ে যায়। আকাশ ও গেরিলা হামলায় হানাদার বাহিনী এদের পরাজয় নিশ্চিত ভেবে আত্মসমর্পণের চেষ্টা চালায়। এদিন হানাদার বাহিনীর ৩৬ ডিভিশনের সেনাধ্যক্ষ মেজর জেনারেল জামশেদ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন ঢাকায়। এ দিন মেজর জেনারেল জামশেদ ঢাকায় পৌঁছে জেনারেল নিয়াজীকে আত্মসমর্পণ করতে বার বার অনুরোধ করেন। এদিন ৪৮ পাঞ্জাব ডিভিশনের অধিনায়ক ১০৭ জন সৈন্য সহ আত্মসমর্পণ করেন। এদিন প্রচন্ড যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট সহ বিভিন্ন ঘাঁটি হানাদার মুক্ত হয়। এদিন ডাঃ মালেক সহ মন্ত্রীসভার সদস্য আলবদর, আল শামস, রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা গা ঢাকা দিতে শুরু করে। এদিন হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা বুদ্ধিজীবীদেরকে ধরে নিয়ে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। এদিন সিলেটের এমসি কলেজ মাঠে হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণের কথা থাকলেও তারা বিমান বন্দরে জড়ো হতে থাকে।