সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
আজ ৬ ডিসেম্বর। সুনামগঞ্জ ও ছাতক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদারদের পরাস্থ করে সুনামগঞ্জ মহকুমা সদর ও ছাতক থানা হানাদার মুক্ত করেন। তথ্য নিয়ে জানা যায়, ৬ ডিসেম্বর ভোরে মেজর এম.এ মোত্তালেব- এর নেতৃত্বে স্থানীয় ইব্রাহিমপুুর গ্রামে সমবেত হন মুক্তিযোদ্ধারা। পরবর্তীতে সংঘবদ্ধ হয়ে সুনামগঞ্জের পিটিআই (প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) স্কুল ক্যাম্পে হানাদার বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে চারিদিক ঘেরাও করে আক্রমণ চালায়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণপণ লড়াই আর মুক্তিকামী জনগণের দুর্বার প্রতিরোধে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে এইদিন পাকবাহিনী সুনামগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। হানাদারদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে আজকের এই দিনে। পাকবাহিনীর পতনের পর এ এলাকার সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে মুক্তির উল্লাস। আনন্দ উদ্বেলিত কন্ঠে ‘জয়বাংলা’ ধ্বনি আর হাতে প্রিয় স্বদেশের পতাকা নিয়ে ছুটাছুটি করতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা সহ তরুণ-যুবক সবাই। সুনামগঞ্জ জেলা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বের হয় আনন্দের মিছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে জেলা শহর। অন্যদিকে ৫ ডিসেম্বর রাতে ছাতক সিমেন্ট কারখানা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান জানতে পেরে সকালে (৬ ডিসেম্বর) সম্মুখ যুদ্ধ ছাড়াই পিছু হঠতে থাকে পাক সেনারা। পরবর্তীতে হানাদার বাহিনী সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি এলাকায় আশ্রয় নেয়। ফলে বিনাযুদ্ধে ছাতক উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুনামগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হাজী নুরুল মোমেন জানান, জেলার অরক্ষিত বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এছাড়া স্থানীয় রাজাকারদের তালিকা করে বিচারের আওতায় আনা এবং অমুক্তিযোদ্ধা যারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হয়েছে তাদের বাতিল করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত করে সম্মানী ভাতার আওতায় আনতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ছাতক পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যেও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড সহ বিভিন্ন সংগঠন।