স্পোর্টস ডেস্ক :
বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হচ্ছে আজ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে নয়টায় টেস্টটি শুরু হবে। দুই দলের মধ্যকার প্রথম টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে হওয়া টেস্টটিতে ৬৪ রানে জয় তুলে নেয় সাকিববাহিনী। তাতে করে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়েও যায় বাংলাদেশ। আজ শুরু হতে যাওয়া টেস্টে যদি বাংলাদেশ জিতে তাহলে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতবে স্বাগতিকরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ হবে হোয়াইটওয়াশ।
নয় বছর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্টে হারানো গেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শুধু টেস্টেই হারায়নি বাংলাদেশ, দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশও করেছে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ মিলেছে। এবার দেশের মাটিতে ক্যারিবীয়দের ধবলধোলাইয়ের সুবর্ণ সুযোগ আছে। সুযোগটি ভালভাবেই কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশও।
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান যেমন বলেছেন, ‘আমরা চাই ২-০তে জিততে। তারজন্য যা কিছু করা দরকার, যেভাবে প্রস্তুতি নেয়া দরকার আমরা সেভাবেই নিচ্ছি। যদি সেটা কোনভাবে না হয় তাহলে আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য যেন ১-০তে সিরিজ জিতি, কারণ আল্টিমেট লক্ষ্য সিরিজ জেতা। কিন্তু আমরা ডিফেন্সিভ ওয়েতে সিরিজটা জিততে চাই না। আমরা চাই পজিটিভ ফ্রেম অব মাইন্ড নিয়ে সিরিজটা জিতি এবং ২-০তে জিতি।’
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে কোন সময় ঘুরে দাঁড়াতে পারে তাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অভিজ্ঞ দল। দলটিকে ঘুরিয়ে দেয়ার মতো ক্রিকেটাররাও আছেন। তবে দেশের মাটিতে বাংলাদেশ যে কতটা শক্তিশালী দল তা ভাল করেই বুঝে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশে ২০১২ সালের পর আবার টেস্ট খেলতে এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এসে বাংলাদেশের নতুন চেহারাই দেখল। যে দলটিকে টানা ৭ টেস্টে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই দলটির কাছে চট্টগ্রামে হেরেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রেথওয়েট অবশ্য বিশ্বাস করেন দল মিরপুর টেস্টে ঘুরে দাঁড়াবে। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের জন্য কাজটা কঠিন। তবে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই। আমরা আত্মবিশ্বাসী। ছেলেরা সবসময়ই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমরা লড়াই করতে প্রস্তুত। সিরিজ ড্র করতেও প্রস্তুত। আমরা চাপে নেই। যদি টপ পাঁচ ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে বড় জুটি মিলে তাহলে শেষ টেস্টটা জিততে পারি।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল এ পর্যন্ত ১৫টি টেস্ট খেলেছে। তিনটিতে জিতেছে। দুটিতে ড্র করেছে। ১০টিতেই হেরেছে। এবার সময় এসেছে জয়ের সংখ্যা বাড়িয়ে নেয়ার। ২০১১ সালের পর থেকে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে পাত্তা পায়নি বাংলাদেশ, শুধুই হেরেছে; সেই হারের গোলকধাঁধা থেকে বের হওয়া গেছে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানা দুই টেস্টে হারানোর যোগ্যতা দেখানোর পালা বাংলাদেশের। মিরপুর টেস্টে জিতলেই এ বছর জুলাইয়ে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ, সেই ফলের প্রতিশোধও নেয়া হয়ে যাবে বাংলাদেশের।
পারবে বাংলাদেশ তা করতে? খুবই সম্ভব। হঠাৎ করে মুশফিকুর রহীম আঙ্গুলে চোট পেয়েছিলেন। তিনি সুস্থ। খেলবেন। তাই চিন্তা দূর হয়েছে বাংলাদেশ শিবিরে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে আছে চিন্তা। তারা যে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের ভোগানো পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে পাচ্ছেন না। তিনি এক টেস্ট নিষিদ্ধ হয়েছেন। তাই মিরপুর টেস্টে খেলতে পারবেন না।
বাংলাদেশের ওপেনিং নিয়েও আছে সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরে ওপেনিং জুটি থেকে রান মিলছে না। সৌম্য সরকারের সঙ্গে এবার ঘরোয়া লীগে ঝলক দেখানো সাদমান ইসলাম যদি সেই ব্যর্থতার ধারা দূর করে দিতে পারেন তাহলেতো বাংলাদেশ দলের জন্য আরও ভাল হয়। যে সমস্যা সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে বাংলাদেশকে, সেই ওপেনিং জুটির সমস্যাই যদি দূর হয়ে যায় তাহলে অন্যদিকে তো বাংলাদেশই সেরা। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের জন্য আতঙ্ক। ব্যাটসম্যানরা ভাল করলে, স্পিন আক্রমণ দিয়েই তো চট্টগ্রাম টেস্টের মতো মিরপুর টেস্টেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নাস্তানাবুদ করা যাবে। সেই আশাতেই আছে এখন সবাই। জয় মিললেই যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশ করা হয়ে যাবে। দেশের মাটিতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাইটা দেয়া হবে।