কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিভিন্ন জরিপে যারা জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন তারাই আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোটের মনোনয়ন পাবেন বলে নিশ্চিত করেছেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, ‘তালিকা প্রায় চূড়ান্ত। তবে ফাইনালি ফিনিংশটা বাকি আছে। আমাদের এলায়েন্সের সাথে আলোচনা করে ফাইনাল করা হবে।’
রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা নমিনেশনটা দিয়েছি জরিপ রিপোর্টের ভিত্তিতে। যাদের ছয় মাস আগেও খারাপ ছিল তারা হয়তো এখন ভালো হয়েছে, তাই তাদের নমিনেশন দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে আগে যারা জনপ্রিয় ছিল তাদের মধ্য থেকে বাদ পড়েছে কম।’
শরিকদের কত আসন দেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী যেটা বলেছেন তা হলো ৬৫ থেকে ৭০টি আসন শরিকরা পাবেন। আলোচনা করে যদি মনে হয় ইউনিবল প্রার্থী তাদের বেশি তাহলে সেটা বাড়ানো যেতে পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘যেমন ধরুন মাশরাফি বিন মর্তুজাকে মনোনয়ন দিলে যিনি সেখানে এখন ইলেকটেড প্রার্থী আছেন তাকে নমিনেশন দেওয়া যাবে না। তাছাড়া ১৪ দলের ইলেকটেড যারা আছে তাদের বাদ দেওয়ার চিন্তা নেই। যদি একান্ত কারও পজিশন খারাপ হয় সেটা ভিন্ন কথা।’
কাদের বলেন, ‘জরিপ অনুসারে কেউ ইলেকটেবল না হলে সে ১৪ দল হোক আর যেই হোক তাকে নমিনেশন দেওয়া হবে না।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন বিষয়টি কীভাবে দেখছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘এটা জাতির কাছে বলতে চাই, এটা একজন দণ্ডিত পলাতক আসামি। এধরনের বক্তব্য দিতে পারে কি না এর বিচার জাতির কাছে চাই।’ ‘ইলেকশন কমিশনের কাছে আমি দৃ্ষ্িট আকর্ষণ করছি। দুটি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কেউ এভাবে ভিডিও কনফারেন্স করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে কি না সে ব্যাপারে আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
নির্বাচন কতটুকু ফেয়ার হবে এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে এর আগে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে তার চেয়ে এবার আরও ভালো নির্বাচন হবে। স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হবে। শতভাগ স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু কোনো দেশেই হয় না। তবে ভালো নির্বাচন হবে।’
জরিপের ফলাফল বিষয়ে কাদের বলেন, ‘দেখুন ছয় মাস বা তিন মাস আগের জরিপ এখন ঠিক নেই। তবে আমাদের অনেকে সে সময় পিছিয়ে ছিল, এখন তারা অনেকে এগিয়ে গেছে। বিরোধী দল কত সিট পাবে বা আমরা কত সিট পাবো এভাবে বলতে চাই না। তবে আমরা বিজয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।’
‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন হলে আমরা রংপুর, সিলেট ও কুমিল্লায় কেন হারলাম। এসব কথা সঠিক নয়।’ যোগ করেন কাদের।
নির্বাচনী ইশতেহার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাবে না। জোটের দলগুলো আলাদা আলাদা ইশতেহার প্রকাশ করবে। তবে সবকিছু প্রকাশ হলেই বলা যাবে। তবে প্রধানমন্ত্রী নিজেই ইশতেহার প্রকাশ করবেন এটার সম্ভাবনাই বেশি। যদিও এখনও তারিখ হয়নি।’
‘বিএনপিই লেজেগুবরে অবস্থায়’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রিজভী সাহেব বলেছেন আমরা লেজেগুবরে অবস্থার মধ্যে আছি। আমরাতো তার কথা শুনেছি, এই নির্বাচনে বিএনপি নিজেরাই লেজেগুবরে অবস্থায় আছে। কাকে কোথায় নমিনেশন দেবে সেটা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছে। তাদেকে আয়নায় নিজেদের চেহারাটা দেখতে বলেন।’
কে কোন প্রতীকে ভোট করবে এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘প্রতীকের বিষয়ে যারা নৌকা নেবে তারা নেবে। আরা যারা নেবে না তারা নেবে না। আর জাতীয় পার্টি লাঙ্গল নিয়েই করবে। এখন যুক্তফ্রন্ট কেউ নৌকায় করতে চাইলে সেটা সম্ভব কি না সেটা ইসি থেকে জেনে নিতে হবে।’
পদত্যাগ করা চার মন্ত্রীর বিষয়ে কাদের বলেন, ‘নির্বাচনকালীন বলতে কোনো সরকার নেই। এখানে চারজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী থাকতে পারবে না। এটা ইলেকশন টাইমে থাকতে পারবে না। এটা সুনিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে দিলে তিনি অ্যাপ্রুভ করবেন। তবে এটা হয়ে যাবে।’