স্পোর্টস ডেস্ক :
দাপুটে জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। বুধবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সাত উইকেটে জয় পেল টাইগাররা। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ২৮ রানে। ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা তিন সিরিজের তিনটিতেই ট্রফি জিতল বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী শুক্রবার।
এদিন জিম্বাবুয়ের দেয়া ২৪৭ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪৪.১ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ইমরুল কায়েস ৯০, লিটন দাস ৮৫, মুশফিকুর রহিম ৪০ ও মোহাম্মদ মিথুন ২৪ রান করেন। জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে সিকান্দার রাজা ৩টি উইকেট শিকার করেন।
ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ সূচনা করে। ওপেনিং জুটিতে ১৪৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস। ৭৭ বলে ৮৩ রান করে লিটন দাস সাজঘরে ফিরে যান। ইনিংসের ২৪তম ওভারে সিকান্দার রাজার বলে কাভার পয়েন্টে ডোনাল্ড তিরিপানোর হাতে ক্যাচ হন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে লিটন দাসের এটি প্রথম অর্ধশত। আর ওপেনিংয়ে ইমরুল-লিটনের ১৪৮ রানের এই জুটিটি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ানডেতে ওপেনিংয়ে পঞ্চম সেরা জুটি।
সম্প্রতি এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন লিটন দাস। আজ ইনিংসের প্রথম ওভারেই কাইল জারভিসের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন লিটন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে ভালো অবস্থানে নিতে বড় ভূমিকা পালন করেন এই ব্যাটসম্যান।
লিটন দাস ফেরার পরপরই আউট হন ফজলে মাহমুদ রাব্বী। দলীয় ১৫২ রানে সিকান্দার রাজার বলে স্ট্যাম্পিং হন তিনি। পাঁচ বল খেলে শূন্য রান করেন রাব্বী। গত ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। মিরপুরে গত ২১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় রাব্বীর।
রাব্বী ফিরে যাওয়ার পর ইমরুল কায়েসের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মুশফিকুর রহিম। দুজনে মিলে ৫৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ব্যক্তিগত ৯০ রানে সাজঘরে ফিরে যান কায়েস। দলীয় ২১১ রানে সিকান্দার রাজার বলে এলটন চিগুম্বুরার হাতে ক্যাচ হন তিনি। ওয়ানডেতে এটি তার ১৬তম অর্ধশত। ইমরুল কায়েস ফিরে যাওয়ার পর মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুন দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ২৪৬ রান সংগ্রহ করে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। সফরকারী দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে উজ্জ্বল ছিলেন ব্রেন্ডন টেইলর। ৭৩ বল খেলে ৭৫ রান করেন তিনি। ওয়ানডেতে এটি তার ৩৫তম অর্ধশত।
অন্যদের মধ্যে সিকান্দার রাজা ৪৯ ও শন উইলিয়ামস ৪৭ রান করেন। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মাশরাফি বিন মুর্তজা ১টি, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১টি, মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৩টি ও মোস্তাফিজুর রহমান ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: সাত উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ে ইনিংস: ২৪৬/৭ (৫০ ওভার)
(হ্যামিলটন মাসাকাদজা ১৪, চেফাস ঝুয়াও ২০, ব্রেন্ডন টেইলর ৭৫, শন উইলিয়ামস ৪৭, সিকান্দার রাজা ৪৯, পিটার মুর ১৭, এলটন চিগুম্বুরা ৩, ব্রান্ডন মাভুতা ৯*, ডোনাল্ড তিরিপানো ৩*; মাশরাফি বিন মুর্তজা ১/৪৯, মোস্তাফিজুর রহমান ১/৩৫, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৩/৪৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ১/৪৫, নাজমুল ইসলাম অপু ০/৪৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১/২১)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ২৫০/৩ (৪৪.১ ওভার)
(লিটন দাস ৮৫, ইমরুল কায়েস ৯০, ফজলে মাহমুদ রাব্বী ০, মুশফিকুর রহিম ৪০*, মোহাম্মদ মিথুন ২৪*; কাইল জারভিস ০/৩১, টেন্ডাই সাতারা ০/৪৮, ডোনাল্ড তিরিপানো ০/২২, ব্রান্ডন মাভুতা ০/৫৬, শন উইলিয়ামস ০/৪৩, সিকান্দার রাজা ৩/৪৩, চেফাস ঝুয়াও ০/৬)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (বাংলাদেশ)।