রেজিষ্ট্রারী মাঠে ঐক্যফ্রন্টের বিশাল সমাবেশে ড. কামাল হোসেন ॥ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে

97
ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন, প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। ছবি- রেজা রুবেল/ মো: কমির মিয়া

স্টাফ রিপোর্টার :
গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আমরা ৭ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। সংবিধানের ৭নং অনুচ্ছেদে সুস্পষ্ট ভাবে লিখা রয়েছে জনগণই দেশের মালিক। কিন্তু বর্তমানে সেই জনগণ আর এখন দেশের মালিক নেই। এই অধিকার আমাদের আদায় করে নিতে হবে। আমাদের হারানো অধিকার ফিরে পেতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তিনি বলেন, আপনারা আমাদের ৭টি দাবীর কথা ইতিমধ্যে জেনেছেন। আমাদের ১ নম্বর দাবি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এর সাথে আরো ৬টি দাবি রয়েছে। এসব দাবির কথা প্রতিটি গ্রামে, ইউনিয়নে, জেলায় ও উপজেলায় ছড়িয়ে দিতে হবে। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। দেশে উন্নয়নের কথা বলা হয়। কার উন্নয়ন এমন প্রশ্ন রেখে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, মানুষকে বঞ্চিত রেখে উন্নয়ন করা যায় না। দেশকে আমরা অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবো।
গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর ঐতিহাসিক রেজিষ্ট্রারী মাঠে ৭ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে প্রথম জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুর ১ টা ৫৫ মিনিটে নগরীর রেজিষ্ট্রারী মাঠে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ঐক্যফ্রন্টের সিলেট সমন্বয়ক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ পরিচালনায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দাবি আদায়ের আন্দোলনে যাওয়ার পূর্বে প্রথমবারের মতো রেজিষ্ট্রারী মাঠে বেলা ২টায় সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাহের শামীমের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সকাল থেকেই ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে যোগ দিতে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট ছোট মিছিল সহকারে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন সভাস্থলে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, সহ সভাপতি সাবিনা রব, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, ঐক্যফন্ট নেতা আকম মোস্তফা আমিন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের স্বমন্বয়কারী শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, এলডিপির মহাসচিব রেজওয়ান আহমেদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, নেজামি ইসলামী পার্টির সভাপতি মওলানা আব্দুর রকিব, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ড. আহাম্মদ আব্দুল কাদের, বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান পিনাম আহমদ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের নেতা জিল্লুর রশীদ চৌধুরী, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আহম শফিকুল্লাহ, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক, বিএনপি নেতা এডভোকেট ফজলুর রহমান, মহিলা দলের নেত্রী তানিয়া আক্তার, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, এম এ হক, ড. ইনামুল হক, খন্দকার মুক্তাদির, মিজানুর হমান মিন্টু, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা একেএম ফজলুল হায়দার, বিএনপির প্রচার বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি কলিম উদ্দিন মিলন, জমিয়ত নেতা শাহিনুর পাশা প্রমুখ।
সমাবেশের প্রধান বক্তার বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিলেটবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা অনেক ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন। আজ এ সমাবেশের মাধ্যমে আরেকটি ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন আপনারা। এই ইতিহাস গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস। নেতাকর্মীদের মুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, তফসীল ঘোষণার পূর্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ইভিএমের মাধ্যমে ডিজিটাল চুরির সুযোগ দেয়া হবে না। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করতে হবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে আমরা অধিকার ফিরিয়ে আনবো।
দেশ ডাকাতের হাতে পরেছে উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সমাবেশে জেএসডির সভাপতি আ.স.ম আব্দুর রব বলেন, শুধু নিজেরা মাঠে আসলে হবে না। জনগণকে মাঠে নিয়ে মাঠে নামতে হবে। এ লড়াই আমাদের বাঁচার লড়াই। এ লড়াইয়ে জিততেই হবে।

সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের মাঠে নামতে হয়েছে। সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি। তাই খালেদা জিয়াকে অন্যায় ও মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তারা জনগণকে ভয় পায় বলেই ইলিয়াস আলীসহ শতশত মানুষকে গুম করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে অনেককে। তার জবাব তাদেরকে দিতেই হবে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, সরকারকে সমঝোতায় আসতে হবে। নাহলে মানুষ তাদের সমুচিত জবাব দিবে। গত ১০ বছরে দেশে মেগা প্রকল্পের নামে দুর্নীতি হয়েছে। এ সরকারের শাসনামলে ৩৭ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে আর হিসেব নেবো।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে গণমানুষের মেয়র বলে সম্বোধন করেন। তিনি বলেন, কাঁঠাল দিয়ে আমসত্ত্ব হয় না। শেখ হাসিনাকে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। শেখ হাসিনাকে দিয়ে ভোট ডাকাতি হয়। তিনি বলেন, দেশের মানুষ মুক্তি চায়। ইলিয়াস আলীসহ সকল নেতাকর্মীকে ফিরে পেতে চায়। দেশের জনগণ কখনো পরাজিত হয় না।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই সরকার ইলিয়াস আলীসহ শত শত ব্যক্তিকে গুম করেছে। তার জবাব দিতে হবে। সব লুটপাটের জবাব দিতে হবে। এজন্য তারা (সরকার) ভয় পায়। বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে তাকে মুক্তি দিতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এই পূণ্যভ’মি সিলেট থেকে আন্দোলন শুরু হলো।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন জেলে। তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। ৭৩ বছর বয়সে তার জেল খাটার কথা না। দেশে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। বিচার হয়নি। আমরা সবাই বলছি, তার (খালেদা) মুক্তি চাই। আমরা শপথ নেই, কিভাবে বেগম জিয়াকে মুক্ত করে আনতে পারি। খালেদা জিয়ার সাথে ডাক্তারও দেখা করতে পারে না’ বলে অভিযোগ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। সাবেক ডাকসু ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার চোরের মতো, ডাকাতের মতো ভোট ডাকাতি করছে। সিলেটের মানুষ সাহস দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, মেধা দিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে বিজয়ী করেছে। আজ আমাদের শপথ নেয়ার সময়, সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়। ভোট যদি হয়, আমরা জিততে পারবো? এ সময় নেতাকর্মীরা ‘হ্যাঁ’ বলে জবাব দেয়। মান্না বলেন, গত বছর নির্বাচনের সময় ঘরে ছিলেন। এবার কোটি কোটি মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন, কেউ যদি পারেন, (এই সমাবেশের) একটি ভিডিও প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়ে দেবেন। তিনি অবাক হবেন, এতো বাধার পরেও কিভাবে এতো মানুষ হলো সমাবেশে।
মান্না আরো বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আমাদের সাথে কথা বলুন। সিলেটের জনসভা সারাদেশে মানুষের জন্য একটি সিগন্যাল। আমরা বাঁচার অধিকার চাই, সুন্দর দেশের অধিকার চাই। সারাদেশের মানুষ একদিকে, অন্যদিকে শেখ হাসিনার সরকার একা থাকবে। আমরা লড়াই করবো।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা এবং এ জোটের সিলেট সমাবেশের সমন্বয়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেছেন, সিলেটের মানুষ কখনই মাথা নিচু করে হাটে নাই। সবসময় মাথা উঁচু করে হাটে। সিলেটের মানুষের টাকাসহ দেশের মানুষের কোটি কোটি টাকা দেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, যেটি কারাগার নয় সেটিকে কারাগার বানিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। সরকার ও সরকার প্রধানকে খালেদা জিয়াকে মুক্তিসহ দেশে সকল প্রকার জুলুম অত্যাচার বন্ধ করে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বাংলাদেশকে ফতুর করে দিয়েছেন ‘রাবিশ মন্ত্রী’ মুহিত সাহেব এমন মন্তব্য করেন। তিনি সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা কি রাবিশ মন্ত্রীকে চেনেন?’ ওই সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা ‘হ্যাঁ’ বলে জবাব দেয়। একইসাথে নেতাকর্মীরা ‘কাউয়া কাউয়া’ বলে স্লোগান শুরু করে। বক্তব্যে সুব্রত চৌধুরী আরো বলেন, সিলেটে এই সমাবেশের মধ্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শুভ সূচনা হলো। সিলেটের পুণ্যভূমি থেকে গণজোয়ার সৃষ্টি হলো। বাংলার ১৬ কোটি মানুষ এই গণজোয়ারের সাথে সম্পৃক্ত হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা আগামী ৪ নভেম্বর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। একই সাথে ৭৫-এর শহীদদের কবর জিয়ারত করে সংসদ ভবন এলাকায় জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা ১৫ আগষ্ট চাই না, ২১ আগস্টের পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা জিয়াউর রহমানের মর্মান্তিক ঘটনারও পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা একটা শান্তির বাংলাদেশ চাই।
বিএনপির প্রচার বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন আর পিছিয়ে যাবার রাস্তা নেই। তাই ডু অর ডাই, আমরা মাঠে থাকবো ইনশা আল্লাহ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী গেল কয়েক বছর ধরে নিখোঁজ। ঢাকার বনানী থেকে তিনি নিখোঁজ হন। তাঁর অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীরা। নিখোঁজ ইলিয়াসকে ফেরত দিতে অসংখ্যবার সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। এবার আরো একবার এই দাবি জানালেন তিনি। তিনি বলেন, ইলিয়াস আলীকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। লুনা আরো বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। দেশ বর্তমানে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নাই। এটা চলতে পারে না।