স্টাফ রিপোর্টার :
বর্বরোচিত ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িত থাকার দায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কিন্তু রায়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানকে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া ক্ষুব্ধ হয়েছে সিলেট আওয়ামী লীগ।
বুধবার (১০ অক্টোবর) আদালতের রায় ঘোষণার পর নগরের কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান নেওয়া জেলা ও মহানগর আয়াওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এসময় তারা বলেন, বর্বরোচিত ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার মূল নায়ক তারেক রহমান। কিন্তু সেই মাস্টারমাইন্ড তারেকের ফাঁসির আদেশ না হওয়ায় সিলেটের মানুষ হতাশ হয়েছে।
এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় খালেদা-নিজামীর চার দলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী-এমপি ছড়াও মাস্টারমাইন্ড তারেক দায়ী। সারা দেশের মানুষ তারেক রহমানের ফাঁসি চেয়েছিল। কিন্তু জাতি আজ হতাশ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, মামলার রায়ের বিরুদ্ধে তারেকের ফাঁসি চেয়ে আপিল করবো।’
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার মূল নায়ক তারেকের ফাঁসি না হওয়াতে আমরা হতবাক হতাশ হয়েছি।’
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘তৎকালীন জোট সরকার বর্বরোচিত এ হামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছিল। তারা জজমিয়া নাটক সাজিয়েছিল। যে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। শত শত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার মূল নায়ক তারেকের ফাঁসি না হওয়ায় সারাদেশের মানুষ হতাশ হয়েছেন। আমরা তারেক জিয়ার ফাঁসি দাবি করছি।’
এসময় জেলা, মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর আওয়ামী লীগ নেতারা রাজপথ ছেড়ে জেলা পরিষদের সামনে এসে অবস্থান নেন। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজপথে দেখা যায়নি।
এদিকে রায়কে ঘিরে যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে প্রস্তুত রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সকাল থেকে পুলিশের রায়ট কার নগরের বিভিন্ন সড়কে টহল অব্যাহত রেখেছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ বলেন, নগরের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।
২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ এ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।