পাসপোর্ট জালিয়াতির ঘটনায় ॥ সিলেটের ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

33

স্টাফ রিপোর্টার :
ভুল তথ্য দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ পাসপোর্টকে অফিসিয়ালে রূপান্তরের মামলা জালিয়াতির মাধ্যমে ৬৫ ব্যক্তিকে অফিসিয়াল পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগে দুই পরিচালকসহ পাসপোর্ট অধিদফতরের ৭১ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরির অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এর মধ্যে ১৬ জনই সিলেটের বাসিন্দা। এর মধ্যে বিয়ানীবাজারের ৫ জন, গোলাপগঞ্জের ৬জন, কানাইঘাটের ২জন, সিলেট ১ জন, হবিগঞ্জের ১ জন, সুনামগঞ্জের ১জন। বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কমিশন থেকে ২০১৬ সালে দায়ের করা মামলাটির চার্জশিট আদালতে দাখিলের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করেন দুদকের সহকারী পরিচালক শফি উল্লাহ।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, আগারগাঁও বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের দুই পরিচালক মুনসী মুয়ীদ ইকরাম ও এস এম নজরুল ইসলাম ( প্রশাসন) এবং ওই কার্যালয়ের আরও কিছু কর্মকর্তা ও সুবিধাভোগীসহ মোট ৭১ জন যোগসাজস করে ৬৫ ব্যক্তিকে সাধারণ পাসপোর্টের বদলে সরকারি কর্মকর্তা দেখিয়ে অফিসিয়াল পাসপোর্ট ইস্যু করে। এ কাজটি করতে ওই ৬৫ ব্যক্তিকে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হিসেবে দেখিয়ে নাম ও পদবি ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে জাল অনাপত্তিপত্র (এনওসি) তৈরি করে সাধারণ পাসপোর্টকে অফিসিয়াল পাসপোর্টে রূপান্তর করে দেয় তারা।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, জালিয়াতির এ ঘটনা তারা ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের মে মাস পর্যন্ত সময়ে ঘটিয়েছে। দুদক আরও জানায়, এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে কিছু সংখ্যক পাসপোর্টধারী অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে যাতায়াত ও বসবাস করছেন। মিথ্যা তথ্য ও জাল অনাপত্তি সনদের ভিত্তিতে বেশকিছু সাধারণ নাগরিক সাধারণ পাসপোর্টকে অফিসিয়াল পাসপোর্টে রূপান্তর করে এবং তা ব্যবহার করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গমন করেন। এ রকম ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহারকারী ৪ জন বাংলাদেশি ব্যক্তিকে তুরস্ক পুলিশ গ্রেফতার করলে জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসে। পরবর্তীতে তাদের তুরস্ক সরকার বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ১৮ জন পাসপোর্টধারী ও পাসপোর্ট অফিসের ৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে দুদকের উপপরিচালক মো. বেনজির আহমেদ শেরে বাংলা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে দুদকরে সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহ ৭১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট সুপারিশ করে কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল করেন। কমিশন বৃহস্পতিবার আদালতের দাখিলের জন্য চার্জশিটটি অনুমোদন দিয়েছে।
চার্জশিটভুক্ত সিলেটের ১৬ জন হলেন : বিয়ানীবাজারের আমিন উদ্দিন, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, গোলাপগঞ্জের দেলোয়ার হোসেন, সুনামগঞ্জ ছাতকের হাবিবুর রহমান, বিয়ানীবাজারের এম এন সাওন সাদেক, হবিগঞ্জ বানিয়াচংয়ের মোহাম্মদ মামুন, গোলাপগঞ্জের শাহজাহান আহমেদ, গোলাগঞ্জের মুজিবুর রহমান, বিয়ানীবাজারের মোহাম্মদ ফয়েজ আহম্মেদ, কানাইঘাটের আফজল চৌধুরী, গোলাপগঞ্জের কায়েস আহমেদ, গোলাপগঞ্জের জুয়েল আহমেদ, কানাইঘাটের মামুন রশিদ, গোলাপগঞ্জের মোহাম্মদ মান্নান, বিয়ানীবাজারের মোহাম্মদ শফিকুল আলম মান্না, সিলেটের মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।