আতিকুর রহমান মাহমুদ ছাতক থেকে :
ছাতকে সুরমা নদীর উপর সেতু নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা শেষে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে দ্রুত গতিতেই চলছে নদীতে সেতুর পাইলিং কার্যক্রম। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সেতু সংলগ্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় দু’শতাধিক লোকজনকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, সেতুর অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১শ’ ৪০কোটি টাকা।
ছাতক শহরের ভাজনামহলের পাশে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুরমা নদীর উর সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সরকারের একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ২০০৬ সালের জানুয়ারি মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর কাজটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১০ সালে সেতুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে ৫১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই প্রকল্পটি অনুমোদন না হওয়া সেতুর নির্মাণ কাজ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তৎকালিন সময়ে সেতুর ছাতক শহর অংশে তিনটি পাকা পিলার ও নদীর ওপারে আরও দুটি পিলারের কাজ করা হয়েছিল। সেতুর দুই পারের সংযোগ অংশের কিছু পাকা কাজ ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। সেতুর অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে ১শ’ ১৩ কোটি টাকার নতুন একটি প্রকল্প একনেক বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার পরই আশার আলো দেখা দেয়। পরবর্তীতে সেতুর নির্মাণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি আরও ২৭ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়া হয় বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। ফলে সুরমা নদীর উপর এই সেতু নির্মানে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১শ’ ৪০কোটি টাকা।
সুরমা সেতুর অসম্পূর্ণ কাজ শেষে গত বছরের ৩০ আগষ্ট কাজের দপ্তারাদেশ দেয়া হয় জন-জেবি নামে একটি যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে কাজ শুরু করলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার বেশ কয়েক মাস কাজ করতে পারেনি ঠিকাদারি এ প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেতু সংলগ্ন এলাকায় ইতোমধ্যে ২০.৪৯ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশ থেকে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সেতুর ষ্টিল ষ্টাক্চার আমদানিতে ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ সর্বমোট খরচ ধরা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। সেতুর দুই পারে প্রায় আড়াই কিলোমিটার এপ্রোচ সড়ক তৈরিতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি ৫০লাখ টাকা। ভূমি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকাসহ সর্বমোট সেতুর নির্মাণ খরচ ধরা হয় প্রায় ১শ’ ৪০ কোটি টাকা।
সেতু তৈরির কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জন-জেবি’র সাইট ইঞ্জিনিয়ার ইমতিয়াজ আহমেদ সুহেল বলেন সেতুর পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর পর নদীর মধ্যখানে পিলার দুটির কাজ হবে। ক্রমান্বয়ে গার্ডার ও ডালাইর কাজ শুরু হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জন-জেবি’র পরিচালক অহিদুজ্জামান চৌধুরি বলেন, আমরা কাজ শুরুর পর জমি সংক্রান্ত জটিলতায় বেশ কয়েক মাস কাজ করতে পারিনি। এখন সেতুর কাজ পুরোদমেই এগিয়ে চলছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এএসএম সাইফুল ইসলাম বলেন, বিদেশ থেকে সেতুর ষ্টীল ষ্টাক্চার আমদানির জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। কাজের গতি ঠিক থাকলে আগামি বছরের আগষ্ট মাসেই সেতুর নির্মান কাজ শেষ হবে।