কাজির বাজার ডেস্ক
পাহাড়ি পথে ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঘর ছাড়ার পর ৬ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন নবীগঞ্জের দুই ছাত্রলীগ নেতা। তাদের কোনো সন্ধান না পেয়ে পরিবারে চলছে আহাজারি। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ইউরোপে পাড়ি দিতে পাহাড়, মরুভ‚মি আর বরফে ঢাকা দুর্গম পথ অতিক্রম করে ইরান থেকে তুরস্ক সীমান্তে পৌঁছানোর পর নিখোঁজ হন মাসুদ রানা ও শাহ পাবেল আহমদ নামে নবীগঞ্জ উপজেলার ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা। তাদের মধ্যে মাসুদ ছয় মাস ও পাবেল তিন মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তারা বেঁচে আছেন কিনা, তাও জানে না পরিবার। প্রায় তিন মাস আগে নিখোঁজ হওয়া পাবেলের মামা সাইফুর রহমান তালুকদার জানান, নবীগঞ্জ রাগিবা রাবিয়া কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পাবেল ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। গ্রিস যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে যাওয়া পাবেল তুরস্ক সীমান্তের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে শেষবার যোগাযোগ করেছিল। বরফে ঢাকা বৈরী পরিবেশে আটকা পড়ে প্রাণে বেঁচে ফেরার আকুতি জানিয়েছিল মামার কাছে। গত ১২ এপ্রিল শেষবারের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তুরস্কে প্রবেশকালে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অভিযানের মুখে পাবেলসহ ২৭ জন যুবক পালানোর চেষ্টা করে। এর পর থেকেই নিখোঁজ সে।
এদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে দুবাই থেকে জাহাজে ইরান পৌঁছান নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামের মাসুদ রানা। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে মাসুদ ছিলেন সবার বড়। তিনিও স্থানীয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে ইউরোপে যাওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ পন্থা বেছে নেন মাসুদ।
চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি পাহাড়ি পথ বেয়ে ইরান থেকে তুরস্কে প্রবেশ করেন মাসুদ। এর আগে ইরান থেকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার জুয়েল মিয়ার মাধ্যমে ইরান-তুরস্ক যাওয়ার গেমে ওঠে মাসুদ। তবে তুরস্ক সীমান্ত অতিক্রম করার সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কবলে পড়ে নিখোঁজ হন তিনি। এর পর থেকে প্রতিনিয়ত জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও ছয় মাসে মাসুদের কোনো খবর পায়নি তাঁর পরিবার। মাসুদের মা সাজনা বেগম জানান, ঘর ছাড়ার সময় ছেলে বলেছিল ইউরোপ পৌঁছে ফোন দেবে। এর পর ছয় মাস কেটে গেলেও ছেলের ফোন পাননি তিনি। নিখোঁজ মাসুদও ছিলেন নবীগঞ্জ রাগিব রাবিয়া ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।