শিক্ষা ও উন্নয়নের জন্য হাবীবুর রহমানের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে – অধ্যক্ষ মাসউদ খান

51

ভাষাসৈনিক অধ্যক্ষ মাসউদ খান বলেছেন, হাবীবুর রহমান সারাজীবন মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হয়ে কাজ করেছেন। শিক্ষা ও উন্নয়নের জন্য তিনি যে অবদান রেখেছেন তা সকলের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রগতিশীল চিন্তা- চেতনার মাধ্যমে মানুষের মধ্যকার বৈষম্যকে দূর করতে আজীবন কাজ করেছেন। একজন আদর্শবাদী এবং উদার মনের মানুষ হিসেবে তাঁর আদর্শকে অনুশীলন করতে পারলেই সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে পরিবতর্ন নিয়ে আসা সম্ভব। হাবীবুর রহমান তাঁর জীবন ও কর্ম দিয়ে সমাজকে সাজাতে চেয়েছেন, তাঁকে মূল্যায়ন করা অতীব প্রয়োজন।
শিক্ষা ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, প্রগতিশীল সমাজকর্মী আ.ন.স. হাবীবুর রহমান স্মরণে আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শোকসভা প্রস্তুতি কমিটি, সিলেট-এর উদ্যোগে শনিবার (১১ আগষ্ট) বাদ সন্ধ্যা সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর কক্ষে এই শোকসভার আয়োজন করা হয়।
শোকসভা প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোকসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এফআইভিডিবি-এর নির্বাহী পরিচালক যেহীন আহমদ, বামপন্থী নেতা কমরেড বেদানন্দ ভট্টাচার্য, আইডিয়া-এর নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক, সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় পলিট ব্যুরো সদস্য কমরেড ধীরেন সিংহ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন হাবীবুর রহমানের ভাগনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. মো. এনামুল হক চৌধুরী।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম চৌধুরী কিমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উদীচি সিলেট জেলার সভাপতি কবি গবেষক এ কে শেরাম, সিলেটের সাবেক এপিপি এডভোকেট শাহ আলম মহিউদ্দিন, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সিলেট শাখার প্রাক্তন সভাপতি আলতাফুর রহমান তাপাদার, বামধারার ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জমির আহমদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফরিদ উদ্দিন আহমদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সদস্য অধ্যাপক আবুল ফজল, হোমিওপ্যাথিক পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি বীরেন দেব, লন্ডন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুহেল আহমদ সাহেল, হাবীবুর রহমানের কনিষ্ট পুত্র প্রতীক রহমান। সভায় শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন হাবীবুর রহমানের ছোট ভাই অধ্যক্ষ মুহিবুর রহমান। আ.ন.স. হাবীবুর রহমানকে নিবেদিত কবিতা পাঠ করেন শাহাব উদ্দিন আহমদ এবং পরিচিতি তুলে ধরেন চৌধুরী ফজলে নূর ইসমত। সভায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জুনাইদ আহমদ। শুরুতে আ.ন.স. হাবীবুর রহমানের মাগফেরাত কামনায় এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শনে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভার শেষে আ.ন.স. হাবীবুর রহমানের জীবন ও কর্মকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলামকে আহবায়ক এবং আব্দুল করিম চৌধুরী কিমকে সদস্য সচিব করে হাবীবুর রহমান স্মৃতি পরিষদ গঠন করা হয়। সভায় বামপন্থী দলের নেতাকর্মী ছাড়া আইডিয়া, এফআইভিডিবি এবং সিলেটের সাহিত্য সংস্কৃতি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এফআইভিডিবি-এর নির্বাহী পরিচালক যেহীন আহমদ বলেন, শিখর স্তরের মানুষের সাথে সম্পর্ক ছিল হাবীবুর রহমানের সম্পদ। তিনি মানুষকে শিক্ষা ও উন্নয়নের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন, যেই শিক্ষা জীবনকে শৃঙ্খলিত করে আবার মুক্তি দেয়। আজকের এই সমাজে তাঁর মত প্রগতিশীল প্রাজ্ঞসর মানবতাবাদী মানুষ খুবই বিরল।
বামপন্থী নেতা কমরেড বেদানন্দ ভট্টাচার্য বলেন, মানুষের মধ্যে নিজের চিন্তা- চেতনাকে যারা সঞ্চরিত করতে পারেন সমাজে তাদের খুবই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে হাবীবুর রহমান ছিলেন দৃষ্টান্তস্বরুপ। শিক্ষা ও উন্নয়নের জন্য তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আইডিয়া-এর নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক বলেন, সমাজ ও রাজনীতি সচেতন একজন ব্যক্তি হিসেবে তিনি ছাত্রজীবন থেকে শিক্ষা ও উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষের মধ্যে শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে সত্যিকার পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব। তাঁর বহুমুখী কর্মকান্ড তার যথার্থতা বহন করে।
সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় পলিট ব্যুরো সদস্য কমরেড ধীরেন সিংহ বলেন, হাবীবুর রহমান আমার অত্যন্ত ভালো বন্ধু ছিলেন। এভাবে তিনি হারিয়ে যাবেন আমি ভাবতে পারিনি। একজন উত্তম মানুষ হিসেবে সমাজের মধ্যে আমুল পরিবর্তনের কথা ভাবতেন। সমাজে তাঁর মত বড় মানুষের খুবই প্রয়োজন।
সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, হাবীবুর রহমান সারাজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। এজন্য তাঁর মধ্যে গণমুখী চেতনা কাজ করতো। শিক্ষা ও উন্নয়নের জন্য কাজ করলে তাঁর কর্মময় জীবনের যথার্থ মূল্যায়ন হবে। বিজ্ঞপ্তি