স্টাফ রিপোর্টার :
ছাতকের লক্ষ্মীবাউর গ্রামে এক নিরীহ পরিবারের বাড়ি জোরপূর্বক দখল করে পরিবারের সদস্যদের বসত ভিটা ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের বাসিন্দা প্রভাবশালী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। শুধু বাড়ি দখল করে কান্ত হয়নি গত মঙ্গলবার সন্ত্রাসী চক্র নিরীহ এই পরিবারের ৪ নারী পুরষকে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে। তারা বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে লক্ষ্মীবাউর গ্রামের আমীর আলী উরফে আমিরুল ইসলামের স্ত্রী সইফা খাতুন সিলেটে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে সইফা খাতুন বলেন, মৌরসি সূত্রে প্রাপ্ত লক্ষ্মীবাউর মৌজার (জেল নং ৮৩, খতিয়ান নং ১৩৮, দাগ নং ৩০২৫) ২শতক ২৭ পয়েন্ট জমির উপর ঘর বানিয়ে বসবাস করে আসছেন তার স্বামী আমীর আলী । একই দাগের আমীর আলীর বড় ভাইয়ের পুত্র ফারুক এর ৩শতক ২৫ পয়েন্ট ভূমি ছিলো। কাউকে না জানিয়ে ফারুক দোয়ারাবাজার উপজেলার পূর্ব মাছিমপুর গ্রামের আলী আহমদের পুত্র মামুনের কাছে ওই ভূমি বিক্রি করে দেয়।
সইফা খাতুন অভিযোগ করেন, ফারুকের ভূমি ক্রয় করলেও মামুন দখলে নিতে আসেন তার স্বামী আমীর আলীর ভূমি। এরপর থেকে শুরু হয় আমীর আলীর পরিবারেক উচ্ছেদের নানা ষড়যন্ত্র। বিষয়টি নিয়ে আমীর আলী আদালতে একটি স্বত্ব মামলা দায়ের করেন। আদালত ওই ভুমিতে স্থিতাবস্থা জারি করেন। কিন্তু এরইমধ্যে নতুন ফন্দি আটে মামুন। ভূমি দখলে নিতে না পেরে গোপনে লক্ষ্মীবাউর গ্রামের প্রভাবশালী সাইফুল ইসলমের কাছে বিক্রি করে দেয়।
সইফা খাতুন লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সাইফুল ইসলাম দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার দুই থেকে আড়াইশ সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে গত ৭ আগষ্ট রাতে তাদের বাড়িতে দখলের উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এসময় তাদের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়। হামলায় তার স্বামী আমীর আলীসহ তাদের স্বজন দেলোয়ার, জাহানার বেগম ও হুসনা বেগম গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় সাইফুল গংরা। আহতরা এখন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় সাইফুল, সুন্দর আলী, কামরুল ইসলাম, নুরুজ্জামান, ইনছান আলী, আরফাত আলী, আছলম আলী সহ তার সহযোগীদের আসামি করে সইফা খাতুন বাদী হয়ে ছাতক থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তবে পুলিশ রহস্যজনক কারনে কোন আসামিকে এখনো গ্রেফতার করেনি। উল্টো আসামিরা বাড়ি দখল করে বাড়ির টিনের বেড়া পাল্টে পাকা দেওয়াল নির্মাণ করেছে। সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী ও অর্থ বিত্তের মালিক হওয়ায় পুলিশ তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বলে সইফা অভিযোগ করেন। অন্যদিকে বসত ভিটা হারিয়ে এখন অনেকটা দিশেহারা সইফাও তার পরিবার। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছে সইফা খাতুন। বসত বাড়ি উদ্ধারে তিনি সংশ্লিষ্ট মহলের সহযোগিতা কামনাও করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে সইফা খাতুনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. আব্দুল বায়েছ।