স্টাফ রিপোর্টার :
ওলিকূল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (রহ.)’র ওরস উপলক্ষে আজ বুধবার লাকড়ি তোড়া উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর শাওয়াল মাসের ২৬ তারিখ শাহজালাল (রহ.) এর ভক্তরা এমনতর উৎসবের মাধ্যমেই কাঠ সংগ্রহ করেন।
জোহরের নামাজ শেষে দরগাহে বেজে ওঠবে বিশেষ এক ধ্বনি, যাকে বলা হয় নাকাড়া। সেই ধ্বনির সাথে সাথেই জনসমুদ্রে একযোগে ধ্বনিত হয় ‘শাহজালাল বাবা কি, জয়!’ ‘লালে লাল, বাবা শাহজালাল!’ ‘৩৬০ আউলিয়া কি, জয়!’। ধীরে ধীরে এই জনসমুদ্র শৃঙ্খলার সাথে হাঁটা ধরে শহরতলির লাক্কাতুরা ও মালনিছড়া চা বাগানের দিকে। এ দুই বাগানের মধ্যবর্তী টিলা থেকে লাকড়ি সংগ্রহ করা হয়। শাহজালাল (রহ.) এর ওরসের ৩ সপ্তাহ আগে এ উৎসব পালিত হয়ে থাকে।
জানা যায়, একবার সিলেটে ইসলামের বিজয় দিবসের কয়েক দিন আগে এক কাঠুরে শাহজালাল (রহ.) এর কাছে একটি ফরিয়াদ নিয়ে আসেন। কাঠুরের ফরিয়াদ ছিল, তার ঘরে বিবাহযোগ্য পাঁচ মেয়ে রয়েছে। কিন্তু তিনি তাদের বিয়ে দিতে পারছেন না। তিনি কাঠুরে ও নিচু জাতের হওয়ায় কেউই তার মেয়েদের বিয়ে করতে চাইছে না। কাঠুরের ফরিয়াদ শুনে শাহজালাল (রহ.) দরগাহে আসার জন্য বলেন কাঠুরেকে। পরবর্তী সিলেট বিজয় দিবসে সঙ্গীয় আউলিয়া, ভক্ত ও আশেকানদের নিয়ে শাহজালাল (রহ.) লাক্কাতুরা বাগানে গিয়ে কাঠ সংগ্রহ করেন। ফিরে এসে তিনি সকলের কাছে জানতে চান, তারা আজ কি কাজ করেছে। সবাই সমস্বরে জবাব দেন, তারা আজ কাঠুরিয়ার কাজ করেছেন। এরপর শাহজালাল (রহ.) সবাইকে ওই কাঠুরের কাহিনী বর্ণণা করলে অনেকেই কাঠুরের মেয়েদের বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে কাঠুরে তার মেয়েদের জন্য ওই জমায়েত থেকেই বর পছন্দ করেন। এ ঘটনার পর থেকে সাম্য ও শ্রেণী বৈষম্যবিরোধী দিবস হিসেবেও দিনটি পালন করেন শাহজালালের ভক্ত-আশেকানরা।