বেতারে তথ্য অধিকার আইন বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান তথ্য কমিশনার ॥ তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে

99

প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ বলেছেন, তথ্য পাওয়া জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ জনগণের এই অধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট বেতারের সভা কক্ষে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ বিষয়ে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিভাগীয় তথ্য অফিস, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও সিলেটের গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান তথ্য কমিশনার বলেন, তথ্য অধিকার আইন একটি সামগ্রিক আইন। এ আইন কোন আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। জনস্বার্থে এ আইনের প্রয়োগ ও বাস্তবায়নে গণমাধ্যম কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আগে তথ্য গোপনের একটা প্রবণতা ছিল। এখন আর সেটা নেই। আইনের ফলে সরকারি ও বেসরকারি সকল দফতরের কর্মকর্তাগণ তথ্য প্রদানে বাধ্য। সরকার সবক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি প্রতিরোধে এ আইন করেছে। এখন সর্বত্রে এ আইনের প্রয়োগ চায়।
মরতুজা আহমদ বলেন, তথ্য অধিকার আইন একমাত্র আইন যা প্রজাতন্ত্রের মালিক হিসেবে জনগণ সকল কর্তৃপক্ষের উপর প্রয়োগ করতে পারে। তাই, তথ্য অধিকার আইন সম্বন্ধে জনগণকে জানানোর উদ্যোগ নিতে হবে। তথ্য প্রদানকারি কর্মকর্তাদেরও এ আইন সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে। তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োগ যত বাড়বে স্বচ্ছতা তত নিশ্চিত হবে, দুর্নীতি রোধ হবে।
তিনি বলেন, তথ্য গোপন নয়, যেকোন দপ্তরে তথ্য দ্রুত প্রদান করাই বুদ্ধিমানের লক্ষণ। তথ্য গোপন করলে যেমন তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তার শাস্তি হয় তেমনি আইনের অপব্যবহার ও অপ্রয়োগ করা যাবে না। সেটাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রধান তথ্য কমিশনার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকার মনে করে কাউকে পিছনে রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনেকটা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি জনগণের কল্যাণে কাজ করেন সেটা বিশ^ব্যাপি স্বীকৃত।
মরতুজা আহমদ বলেন, বিশে^র বিভিন্ন দেশে জনগণের দাবি ও আন্দোলনের মাধ্যমে তথ্য অধিকার আইন করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যেদেশের সরকার জনগণের অধিকারের কথা চিন্তা করে স্বপ্রণোদিত হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরপরই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এর ফলে দেশে দুর্নীতি কমেছে, জবাবদিহি নিশ্চিত হয়েছে।
বাংলাদেশ বেতার সিলেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিলেট সাংস্কৃতিক রাজধানি, জাতীয় সংস্কৃতি সমৃদ্ধ করেছে সিলেট বেতার। দেশের স্বাধীনতায় বেতারের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশব্যাপি বেতারের আধুনিকায়নে সরকার বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সিলেট বেতার কমপ্লেক্স নির্মাণে ৫৬ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। শিগগিরই এ কাজ শুরু হবে। তিনি হুশিয়ারি করে বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনধরণের অনিয়ম, দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।
বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক মো. ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক জুলিয়া জেসমিন মিলি, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট প্রতিনিধি সাংবাদিক আজিজ আহমদ সেলিম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর ব্যুরো প্রধান মকসুদ আহমদ মকসুদ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তাপস দাশ পুরকায়স্ত, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ^াস সমর, আব্দুর রশিদ মো. রেনু, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সিলেট ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা) এর সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দেব, সিনিয়র সাংবাদিক আ ফ ম সাঈদ, প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেতার সিলেটের আঞ্চলিক প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন খান, আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক দবির আল কাদের, উপ-আঞ্চলিক পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তারিক, মো. আব্দুল হক, উপ-আঞ্চলিক প্রকৌশলী আবুল হাসান মো. ফয়সল, উপ-বার্তা নিয়ন্ত্রক সঞ্জয় সরকার, সহকারি পরিচালক পবিত্র কুমার দাশ, প্রদীপ চন্দ্র দাশ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিনিয়র সাংবাদিক আল-আজাদ, ইকবাল কবির, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় সভাপতি আব্দুল বাতিন ফয়সল, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান তালুকদার, সিলেট জেলা প্রতিনিধি ও সিলেট প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য শুয়াইবুল ইসলাম, চ্যানেল আই সিলেটের প্রতিনিধি সাদিকুর রহমান সাকী, সিলেট বেতারের বহিঃপ্রচার প্রতিনিধি এম রহমান ফারুক, প্রথম আলোর ক্যামেরা জার্নালিস্ট আনিস মাহমুদ, রিপোর্টার মানাউবি সিংহ শুভ, সমকালের ক্যামেরা জার্নালিস্ট ইউসুফ আলী, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের রিপোর্টার মাধব কর্মকার, ক্যামেরাপার্সন গোপাল বর্ধন, মোহনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন শামীম আহমদ, জনকণ্ঠের রিপোর্টার এমরানুল হক চৌধুরী, প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি