গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
ভাঙ্গা চোরা সড়কে ভোগান্তি। সমস্যার দাবানলে জ্বলছে মুরাদপুর পিরেরচকবাসী। জনপ্রতিনিধিরে দ্বারে দ্বারে অনেক মায়া-কান্না করেও কোন সুফল মিলছে না। সুরমার কুল ঘেঁষা জনপদ সিলেট-কানাইঘাট সড়কের মুরাদপুর ও পিরেরচকবাসী চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ভাঙ্গা সড়কের কারণে সাধারণ মানুষের জন্য চলাচল অনুপযোগি হয়ে পড়েছে এ সড়ক। প্রায় প্রতদিন ভারী যানবাহন সড়কের গর্তে পড়ে আটকে গিয়ে দেখা দেয় যানজট। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত মুরাদপুর বাজার এলাকা। বাজারের ভেতর দিয়ে সিলেট-কানাইঘাট সড়কে যাতায়াতকারী যানবাহনের যাত্রী, স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছাত্রছাত্রীরা ভাঙ্গা রাস্তার কারণে নাজেহাল হচ্ছেন। রোগী বহনকারী গাড়ি, অটোরিক্সা, লেগুনা, বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য ছোট যানবাহন প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। সিলেট সদর উপজেলার ৪নং খাদিমপাড়া ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত মুরাদপুর ও পিরেরচক এলাকার উন্নয়নে আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কোনো পরিকল্পিত উদ্যোগ। সিলেট সদর উপজেলার শেষ সীমানা পিরেরচক এলাকার অবস্থান। তারপরেই গোলাপগঞ্জ বাঘা ইউনিয়নের সীমানা শুরু। সিলেট শাহপরান সেতু থেকে নেমে মুরাদপুর বাজার হয়ে যাতায়াত করার পাশাপাশি সিলেট শহর থেকে হযরত বোরহান উদ্দিন (রহ:) সড়ক হয়েও যাতায়াত করেন সাধারণ মানুষ। মুরাদপুর বাজারে অবস্থিত সিলেটের অভিজাত খাদ্য প্রস্তুতকারী বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শাখা রয়েছে। এছাড়া মুরাদপুর বাজারে প্রায় দুই শতাধিক দোকানপাটও রয়েছে। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের আবাস মুরাদপুরসহ অন্যান্য স্থানে। মুরাদপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বোরহান উদ্দিন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, ভাঙ্গা রাস্তার কারণে ব্যবসায়ীক ভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিগত দু-বছর ধরে রাস্তার করূন দশা দেখা দিয়েছে। রাস্তার উন্নয়ন বা সংস্কারের কোনো কাজ কেউ করছে না। এ ব্যাপারে তারা খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করেও কোনো ফলপ্রসূ সমাধান পাননি। মুরাদপুর বাজারের ব্যবসায়ী সাহেদ আহমদ জানান, রাস্তার উন্নয়ন না করার কারণে তাদের ব্যবসার মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। আরেক ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ বলেন, রাস্তাটি বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে,তাতে যে কোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মুরাদপুর বাজারের ব্যবসায়ী হাজারী ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের পরিচালক হাজী মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন জানান,অচিরেই যদি রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু না হয়, তাহলে যাত্রী সাধারণসহ সবাইকে আরো দুর্ভোগ পোহাতে হবে। ডা. কে এম মেহেরুল্লহ বলেন, চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়া রাস্তার কারণে রোগীরা চিকিৎসার সেবা নিতে আসতে পারেনা। তিনি রাস্তার সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান। মুরাদপুর বাজারের ব্যবসায়ী এম এ মতিন বলেন, মুরাদপুর বাজারের ভেতরের অবস্থা অত্যান্ত নাজুক, অনেক সময় সড়কের গর্তে পড়ে যাত্রীসহ অটোরিক্সা উল্টে গিয়ে অনেকেই আহত হন। মুরাদপুর বাজার হয়ে যাতায়াতকারী অনেক চালক বলেন, এলাকার জনপ্রতিনিধি থাকা সত্তেও রাস্তার জরাজির্ণ অবস্থা দেখে মনে হয়, যেনো নেই কোনো অভিভাবক। ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা উন্নয়নের জোয়ারে এলাকা ভাসিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের পরে তাদের হদিস পাওয়া যায় না। বিভিন্ন যাত্রীরা ক্ষোভের সাথে জানান, বড় বড় গর্তের কারণে তাদের কষ্টের সীমা থাকেনা। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান পানি জমাট বাধেঁ রাস্তার উপর। অনেক স্থানে গর্তে অটোরিক্সা পড়ে গিয়ে আটকে যায়। তারপর অনেক কষ্টে যাত্রীরা তা টেনে তুলেন। একই অবস্থা মাল বোঝাই ট্রাকেরও। প্রতিদিন কোনো না কোনো স্থানে ট্রাক গর্তে পড়ে দিনের পর দিন রাস্তায় অবস্থান করে থাকে। পরে ক্রেন লাগিয়ে তা তুলতে হয়। মুরাদপুর বাজার এলাকার পাশ্ববর্তী নলুয়া, তুরুকভাগ, খালপাড়, মজিদপুর, রুস্তুমপুর, বাঘা, জালালনগর এলাকার বাসিন্দার প্রতিদিন এ ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে শহরে যাতাযাত করে থাকেন। তাদের সবার দাবী, বর্তমান উন্নয়নমুখি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে এ সড়কের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী।