রমজান মাসে কানাইঘাটে অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ

44

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
পবিত্র রমজান মাসেও কানাইঘাট উপজেলা জুড়ে পল্লীবিদ্যুতের চরম লোড শেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সর্বস্তরের জন সাধারণ। উপজেলার অনেক এলাকায় ইফতার, তারাবীর নামাজ ও সেহরীর সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এক দিকে গরম অন্য দিকে ঘন ঘন লোড শেডিংয়ের কারণে জন জীবন বির্পযস্ত হয়ে পড়েছে। ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির ও বাসা বাড়ীতে ভোগান্তি ফ্রিজের খাবার নষ্ট, ভোল্টেজ কমবেশির কারণে ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী নষ্ট, শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ায় চরম বিঘœ ঘটছে। অপরদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে, ক্ষুদ্র মিল কারখানা, কম্পিউটার দোকান কেন্দ্রিক ব্যবসা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। উপজেলার প্রত্যন্ত বিভিন্ন এলাকার লোকজন ঘণ্টার ঘণ্টা বিদ্যুৎ না পেয়ে ফুঁসে উঠেছেন। বিশেষ করে রমজান মাসে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা কোন মতেই ধর্মপ্রাণ মানুষ মেনে নিতে পারছেন না। অনেক এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকরা কানাইঘাট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসে এসে তাদের অভিযোগের কথা তোলে ধরলেও পল্লীবিদ্যুতের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কোন ধরণের কর্ণপাত করছেন না। বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অফিসে ফোন দিলে কেউ রিসিভ করে না সব সময় নাম্বার টি ব্যস্ত দেখায় বলে গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার দলের নেতৃবৃন্দ ঘনঘন লোড শেডিং বন্ধে বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানানোর পরও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে না। পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে একই কথা সিলেট কুমারগাঁও সাব স্টেশন ত্র“টির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘœ হচ্ছে। লাইন মেরামত করলে বিদ্যুৎ পাবেন এমন অযুহাতের কথা বলে এড়িয়ে যান। বিশেষ করে গাছবাড়ী, রাজাগঞ্জ, কানাইঘাট সদর ইউপি, চতুল, লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ একেবারে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। কোন কোন এলাকায় ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না, পল্লীবিদ্যুতের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বিক বিদ্যুৎ পরিস্থিতির মনিটরিং না করায় ঝড়-বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎ লাইন বিভিন্ন এলাকায় ছিড়ে পড়ে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিলে মাঠে সঠিক সময়ে কেউ যান না বলে বিদ্যুত গ্রাহকদের বিস্তার অভিযোগ রয়েছে। কম বিদ্যুৎ জ্বালানোর পরও ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয়। মিটার ভাড়া, ট্রান্সফরমার ভাড়া, ব্যাট, সার্বিস চার্জ, গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিলে ধরিয়ে দিয়ে নানা ভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ত্রুটিপূর্ণ পুরনো বিদ্যুৎ লাইন মেরামত না করায় লাইন ফিউজ হয়ে চরম লোড শেডিং হচ্ছে বলে জানা গেছে। কানাইঘাট উপজেলায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাড়ে ১০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের যেখানে প্রয়োজন সেখানে সাড়ে ৫ মেঘাওয়াট বিদ্যু সরবরাহ করা হচ্ছে বলে সূত্রে জানা যায়। ঘনঘন লোড শেডিংয়ের ব্যাপারে কানাইঘাট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের শাহিন রেজার সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা ইচ্ছাকৃত ভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করি না। নানা ধরনের ত্র“টির কারনে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিঘœ ঘটে থাকে। ৩২ কেভি বিদ্যুত লাইন ও কানাইঘাট বিদ্যুৎ সাব-ষ্টেশনের পরিধি বৃদ্ধি এবং গাছবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান করা হলে বিদ্যুতের লোড শেডিং একে বারে কমে যাবে।