যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে ইমামকে গুলি করে হত্যা

25

কাজির বাজার ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের নিউজার্সির একটি মসজিদের বাইরে হাসান শরীফ নামে একজন ইমামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিউজার্সির পুলিশ ওই হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। এমনকি কী কারণে ওই ইমামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে সাউথ অরেঞ্জ অ্যাভিনিউ এবং ক্যামডেন স্ট্রিটের মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। নেওয়ার্কের পাবলিক সেফটি ডিরেক্টর ফ্রিটজ ফ্রেগ এক বিবৃতিতে বলেন, ইমাম শরিফকে নিকটস্থ ইউনিভার্সিটি হাসপাতোলে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয়। পরে তিনি সেখানেই মারা যান।
ফ্রিটজ ফ্রেগ জানান, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে।’ তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
হাসান শরীফ ২০০৬ সাল থেকে নিউয়ার্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন বলে জানিয়েছেন ইউনাইটেড স্টেটস ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মুখপাত্র লিসা ফার্বস্টেইন। ওই মুখপাত্র বলেন, আমরা তার মৃত্যুর খবর জানতে পেরে গভীরভাবে শোকাহত এবং তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। নিউয়ার্ক পাবলিক সেফটি ডিরেক্টর ফ্রিটজ ফ্রেজ এর আগে নিশ্চিত করেন যে, পুলিশের কাছে একটি ফোন কল আসে এবং তারা জানতে পারেন যে এক ব্যক্তিকে গুলি করা হয়েছে।
নিউজার্সির গভর্নর ফিল মারফি একটি বিবৃতিতে বলেছেন, আমি মুসলিম সম্প্রদায় এবং সমস্ত ধর্মের লোকদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা সমস্ত বাসিন্দাদের নিরাপদ রাখতে আমাদের ক্ষমতায় সবকিছু করব। বিশেষ করে তাদের প্রার্থনার স্থানগুলো নিরাপদ করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। তবে এখন পর্যন্ত হত্যার নির্দিষ্ট কোন কারণ জানাতে পারেনি স্থানীয় পুলিশ।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্সের নিউ জার্সি শাখার মুখপাত্র দিনা সায়েদআহমদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাথু প্লাটকিন বলেন, কেন এই হত্যাকাÐ ঘটল, সে সম্পর্কে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।’ তিনি বলেন, ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক ঘটনা যখন বাড়ছে, তখন এ ধরনের বন্দুক সহিংসতা আমাদের রাজ্যে ভয় ও উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সম্ভব সব দিক থেকেই অনুসন্ধান করা হবে এবং হামলাকারী বা হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’ তিনি বলেন, ‘মুসলিম সম্প্রদায় যখন পক্ষপাতমূলক ঘটনা ও অপরাধে উদ্বিগ্ন, তখন আমি মুসলিম সম্প্রদায় এবং সকল বিশ্বাসী জনগোষ্ঠীকে আশ্বস্ত করছি যে আমরা সকল অধিবাসীকে, বিশেষ করে আমাদের উপাসনালয়ের ভেতরে ও আশপাশে যারা বসবাস করেন, তাদের নিরাপদ রাখতে আমাদের সব শক্তি প্রয়োগ করব।’ পরবর্তীতে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেন যে, হামলার শিকার ব্যক্তি একজন ইমাম এই তাকে মসজিদের বাইরে গুলি চালানো হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ইসরায়েল-হামাসের মধ্যকার সংঘাত শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে একই সঙ্গে ইসলামবিদ্বেষ এবং ইহুদিবিরোধী হামলা বেড়ে গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারা মসজিদ থেকে ১০ ফুট দূরে পার্কিং লটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই ইমামকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তিনি মারা যান। তার পেটে ও বাম হাতে গুলি লেগেছে।