প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে নীতিমালা

28

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) প্রস্তাবের খসড়াটি যাচাই করে দেখছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিবর্তনের প্রয়োজন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে প্রণীত বিধিমালায় প্রধান শিক্ষক পদে সরাসরি ৩৫ শতাংশ ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে ৬৫ শতাংশ নিয়োগ করার বিধান রয়েছে। ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষক পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়। এখন এ পদে নিয়োগ-পদোন্নতি পিএসসির আওতাধীন। ফলে বিধিমালায় পরিবর্তন আবশ্যক। প্রস্তাবে আরো কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমান বিধিমালায় পুরুষ ও নারীর জন্য আলাদা শিক্ষাগত যোগ্যতার উল্লেখ রয়েছে। সহকারী শিক্ষক হতে হলে পুরুষদের স্নাতক আর নারীদের উচ্চ মাধ্যমিক পাস হতে হয়। প্রস্তাবে উভয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতাই স্নাতক করতে বলা হয়েছে। অবশ্য নারীদের জন্য ৬০ শতাংশ কোটা থাকছে। সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্নাতক পাস হলেই আবেদন করা যায়। প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে, এ পদের জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাগবে। এখন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ২৫ থেকে ৩৫ বছর। পিএসসির নীতিমালার সঙ্গে সংগতি রেখে বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ৬৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষকের পদ পদোন্নতির মাধ্যমেই পূরণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিলযোগ্য। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এখন যেকোনো বিষয়ে পাস প্রার্থীর সমান সুযোগ রয়েছে। গণিত ও বিজ্ঞানের কথা বিবেচনা করে সহকারী শিক্ষক পদে ২০ শতাংশ বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। ক্লাস্টার বা উপজেলাভিত্তিক আর্ট ও সংগীত শিক্ষক রাখতে বলা হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ আগের মতোই উপজেলা বা থানাভিত্তিক হবে। তবে কেন্দ্রীয় সহকারী শিক্ষক নির্বাচন কমিটির সুপারিশ লাগবে। বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা না হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া যাবে না। ওই ব্যক্তির স্ত্রী বা স্বামী অথবা বাগদত্ত বা বাগদত্তা, যিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন, তিনিও নিয়োগ পাবেন না। শিক্ষকদের পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা যাবে, তবে পিএসসির সুপারিশ দরকার। বর্তমানে শিক্ষক পদে যোগদানের তিন বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ বা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, প্রস্তাবিত বিধিমালায় তা থাকছে না।
নীতিমালা অনড় বিষয় নয়। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন আনাই কাম্য। তবে তা যথোচিত হতে হবে। অভিজ্ঞতা বলে, বিদ্যমান বিধিমালায় অস্পষ্টতা তো থাকেই, পরিবর্তনের নামে প্রায়ই সেটিকে আরো জটিল করে তোলা হয়। আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সব বিষয় স্পষ্ট করে তবেই প্রস্তাবিত বিধিমালা অনুমোদন করবে।