রেললাইনে কলেজ ছাত্রীর খন্ড-বিখন্ড লাশ ॥ স্বামী, দেবর, শাশুড়িসহ ৬ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের

68

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার গোপাল নগর রেল ক্রসিং এলাকা থেকে তাসরিকা বেগম ওরপে তান্নি (২৪) নামে ৫ মাসের অন্ত:সত্ত্বা এক কলেজ ছাত্রী গৃহবধূর খন্ডবিখন্ড মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় তিন দিন পর রবিবার মৌলভীবাজার আদালতে একটি মামলা হয়েছে। নিহত তান্নির বড় ভাই আজিজুল ইসলাম তানিম বাদী হয়ে রোববার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, মৌলভীবাজার এ (নারী ও শিশু ১৪৩/২০১৮ইং) মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় নিহত কলেজ ছাত্রী গৃহবধূ তান্নির স্বামী আলী ইবতেজা রাসেল (৩৭), দেবর আলী মর্তুজা রুবেল (৩৫), আলী ইবতেজা রুমেল (২৪), চাচাতো ভাই কামরান আহমেদ (৪০), দেবরের স্ত্রী তাসলিমা সুলতানা রুমি (২৭) ও শাশুড়ি নুরজাহান বেগম (৫৫)-কে আসামি করা হয়। অতিরিক্তি জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত, মৌলভীবাজার এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো: রফিকুল ইসলাম এর আদালত মামলাটি তদন্ত পূর্Ÿক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য মৌলভীবাজার পুলিশ ব্যুরো ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই)কে নির্দেশ দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার নিহত তান্নির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর তান্নির পিতার গ্রামের বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের পাবই গ্রামে তার লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতের বড় ভাই আজিজুল হক তামিম জানান, গত বুধবার তার বোন তান্নি মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজ থেকে অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা শেষে স্বামীর বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। এ সম্পর্কে তার স্বামী আলী ইবতেজা রাসেল তাকে (আজিজুলকে) খবর দেয়। তবে প্রথমে সে স্ত্রীকে খুঁজতে আসেনি। তাছাড়া বোনের পড়াশোনা নিয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে কিছুটা পারিবারিক সমস্যা ছিল। বিশেষ করে তার দেবর আলী মরতুজা রুবেলের সঙ্গে বিরোধ ছিল প্রকট। তারা সন্দেহ করছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজনই পরিকল্পিতভাবে তাসরিফা হক ওরফে তান্নীকে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশটি রেললাইনে রেখেছিল। তান্নির ভাই আজিজুল হক তামিম আরও বলেন, তার বোন ৫ মাসের অন্ত:সত্ত্বাও ছিল। হত্যার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত-২০০৩) এর ১১ (ক)/৩০ ধারা মতে স্বামী আলী ইবতেজা রাসেল, ভাই আলী মরতুজা রুবেল, ছোট ভাই আলী ইবতেজা রুমেল, রুবেলের স্ত্রী তাসলিনা সুলতানা রুমি, চাচাতো ভাই কামরান আহমেদ ও শাশুড়ি নুরজাহান বেগমকে আসামি করে রবিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, মৌলভীবাজার এ (নারী ও শিশু ১৪৩/২০১৮ইং) মামলাটি দায়ের করেন নিহত তান্নির বড় ভাই আজিজুল হক তামিম।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৮ মার্চ) রাত পৌনে ১২টার দিকে তান্নির মরদেহটি কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের অদূরে গোপালনগর রেল ক্রসিংয়ের পাশে রেল লাইনের উপর উদ্ধার করা হয়। নিহত শিক্ষার্থী তান্নি কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের পাবই গ্রামের আনোয়ারুল হকের মেয়ে ও কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের পতনঊষার (বড়বাড়ী) গ্রামের আলী ইবতেজা রাসেল এর স্ত্রী। সে মৌলভীবাজার সরকারী মহিলা কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষার্থী বলে জানা গেছে। তবে নিহত তান্নির পিতার বাড়ির লোকজন বলেছেন তান্নিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ট্রেনের নিচে ফেলে দিয়েছেন।